মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্কুল জেভিএম শ্যামলী।—নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে নোটিস পড়ে গিয়েছে। শুক্রবার স্কুলে আসতেই হবে। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর হাজিরা বাধ্যতামূলক। নোটিস পড়েছে রাঁচির জেভিএম শ্যামলী স্কুলে। না, ওই দিন কোনও পরীক্ষা নেই স্কুলে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসতে হবে স্রেফ সিনেমা দেখার জন্য!
ওই দিনই মুক্তি পাচ্ছে স্কুলের কৃতী প্রাক্তন ছাত্র মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বায়োপিক, ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। সে কারণেই স্কুলের প্রিন্সিপাল ও শিক্ষকরা ঠিক করেছেন, ‘প্রথম দিন, প্রথম শো’ না হলেও স্কুলের সব ছাত্রছাত্রীকে অন্তত প্রথম দিনেই সিনেমাটি দেখানো হবে। প্রিন্সিপাল এ কে সিংহ বলেন, ‘‘ সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে প্রথম দিনেই এই সিনেমা দেখাব। ইচ্ছে ছিল, সবাইকেই প্রথম দিন, প্রথম শো দেখানোর। কিন্তু রাঁচির যে ক’টি হলে এই ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তার সব টিকিট কাটলেও সব পড়ুয়াদের ‘প্রথম দিন, প্রথম শো’ দেখার সুযোগ হবে না। তাই সারাদিন ধরে পর্যায় ক্রমে সব পড়ুয়াদের এই ছবি দেখানো হবে। স্কুলের তরফ থেকেই দেখানো হবে এই ছবি।’’
ডোরান্ডার এই জেভিএম শ্যামলীতেই (আগে নাম ছিল ডিএভি শ্যামলী) পড়াশোনা করেছেন ধোনি। ধোনির বায়োপিক তৈরির সময় এই স্কুল চত্বরে শ্যুটিংও হয়। প্রিন্সিপাল বলেন, ‘‘ধোনি আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ওঁর খেলাধুলোর শুরুও এখানেই। ধীরে ধীরে মাহি সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন।’’ তাঁর কথায়, কৃতী ছাত্রের সাফল্য বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের দেখানোই স্কুল কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য। সে কারণেই শুক্রবার শুধুই সিনেমা, কোনও ক্লাস নয়।
প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, কার্যত ছুটিই থাকবে সেদিন।
ধোনির ছবি ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহও এখন তুঙ্গে। কোন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা প্রথম দিন, প্রথম শো দেখবে তা নিয়ে কয়েকটি মিটিংও হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন স্কুলের শিক্ষিকরা। এক শিক্ষক জানালেন, ‘‘ঠিক হয়েছে নবম ও দশম শ্রেণির সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রথম শো দেখানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। ওদের উৎসাহই সব থেকে বেশি। পরের ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের পর্যায়ক্রমে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যেই এই দিনটিকে ঘিরে তৈরি করে ফেলেছে একটি ‘ফেসবুক পেজ’ও। প্রিয়ম ঝা নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল সিনেমায় দেখানো হচ্ছে! এটা কী কম কথা? কাউন্টডাউন চলছে কয়েকদিন ধরেই। স্কুলে কোন স্যারের কাছে টিকিট মিলবে, কোন ক্লাস কখন, কোন হলে সিনেমা দেখতে যাবে তার আপডেট সব ফেসবুক পেজেই পাওয়া যাবে।’’
স্কুলের খেলার শিক্ষক কেশব বন্দ্যোপাধ্যায়ই ছিলেন ধোনির প্রথম কোচ। আর মাত্র বছর খানেক পরেই তিনি অবসর গ্রহন করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকদিন ধরে খুব নস্টালজিক হয়ে পড়েছি। গত কয়েকদিন ধরে মাহিকে নিয়ে কত টুকরো টুকরো স্মৃতি মনে পড়ছে। এসব স্মৃতি তো সিনেমাতেও দেখানো হবে। স্কুল চত্বরটা সিনেমায় কেমন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেটা দেখারও প্রচন্ড আগ্রহ ছাত্রছাত্রীদের।’’ শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নয়, আগ্রহী শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। প্রিন্সিপাল বলেন, ‘‘আমারও তো ইচ্ছে ছিল, ‘প্রথম দিন প্রথম শো’ দেখব। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের না দেখিয়ে নিজে সিনেমা হলে গিয়ে প্রথমেই দেখে নেওয়াটা ঠিক হবে না। তবে প্রথম দিনই ছবিটা দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy