Advertisement
E-Paper

কুয়াশায় রেলের যাত্রাভঙ্গ, সুরাহা কুয়াশাতেই ঢাকা

ট্রেন ও যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় লাইন কম, সে তো ছিলই। তার উপরে গত কয়েক বছরে ভয়ানক বেড়েছে কুয়াশার উপদ্রব। সব মিলিয়ে উত্তর ভারত হয়ে রেলযাত্রা যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে! এক-একটি দূরপাল্লার ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছতে ১০-১৬ ঘণ্টা দেরি করছে।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫২

ট্রেন ও যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় লাইন কম, সে তো ছিলই। তার উপরে গত কয়েক বছরে ভয়ানক বেড়েছে কুয়াশার উপদ্রব। সব মিলিয়ে উত্তর ভারত হয়ে রেলযাত্রা যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে! এক-একটি দূরপাল্লার ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছতে ১০-১৬ ঘণ্টা দেরি করছে। কখনও কখনও ২০ ঘণ্টা। তার জেরে ট্রেন বাতিলও করতে হচ্ছে রেলকর্তাদের।

রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, ১৯৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি। এত যাত্রীকে পরিষেবা দিতে গিয়ে কামরার সংখ্যা বেড়েছে আড়াই গুণ। কিন্তু রেল লাইন বেড়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। ফলে কুয়াশার কারণে লেট হওয়া ট্রেন একের পর এক দাঁড়িয়ে পড়ছে লাইন জুড়ে। এই জটের কারণে কুয়াশা কেটে যাওয়ার পরেও দ্রুত গতিতে ট্রেন চালিয়ে লেট কমানো যাচ্ছে না। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘মোগলসরাই থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত এই কুয়াশা এবং জটের প্রভাব বেশি। কিন্তু তার প্রভাব পড়ছে অসম থেকে পশ্চিম ভারত পর্যন্ত সর্বত্র।’’

রেল কর্তারা বলছেন, এক দশক ধরে কুয়াশার চরিত্রটাও বদলে চলেছে। এ বছরই যেমন কুয়াশা পড়েছে অনেক আগে। অন্য বছর ডিসেম্বরের শেষ থেকে কুয়াশার দাপট শুরু হয়। এ বছর ডিসেম্বরের গোড়াতেই কুয়াশায় নাজেহাল রেল। মৌসম ভবন সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের শুরুতেই জোরাল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী হাওয়া) হাজির হওয়ায় জলীয় বাষ্প ঢুকে পড়ে। রাতে তাপমাত্রা কমতেই সেই বাষ্প সম্পৃক্ত হয়ে কুয়াশা তৈরি হচ্ছে।

উত্তর ভারতের কুয়াশা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয় বলেও আবহবিদেরা জানাচ্ছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, কাশ্মীর হয়ে ওই ঝঞ্ঝা ঢুকে দিল্লি এবং লাগোয়া উত্তর ভারত দিয়ে বয়ে যায়। ফলে সেখানে জলীয় বাষ্প বেড়ে যায়। তার উপরে সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। সেই কারণে গত ক’দিন ধরে বাড়তি জলীয় বাষ্প রয়েছে। রাতে তাপমাত্রা ঝুপ করে নেমে যাওয়ায় কুয়াশা হয়। মৌসম ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘শীতের রাতে তাবড় উত্তর ভারতের বায়ুপ্রবাহ যেন থমকে যায়। ফলে কুয়াশা সহজে নড়ে না!’’ গত কয়েক বছরে কুয়াশার চরিত্র বদল নিয়ে আবহবিজ্ঞানীরা দিল্লি এবং তাবড় উত্তর ভারতের মাত্রাতিরিক্ত দূষণকে দায়ী করছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, কুয়াশার সঙ্গে ধুলোর কণা মিশে যাওয়ায় তা গাঢ় হচ্ছে। ফলে নিখাদ হাল্কা সাদা কুয়াশা নয়, শীতের রাতভর চারপাশ ঢেকে থাকছে ধোঁয়াশার আলখাল্লায়।

তা হলে এই উপদ্রবের হাত থেকে কি যাত্রীরা রেহাই পাবেন না?

রেল কর্তারা বলছেন, কুয়াশা তো আটকানো যায় না। সে ক্ষেত্রে শীতকালের জন্য আলাদা টাইমটেবিল করতে হয়, যেমন তুষারপাতের কথা মাথায় রেখে শীতকালে অনেক দেশে করা হয়। এ ছাড়া কুয়াশার মধ্যে ট্রেন চালানোর জন্য প্রযুক্তিও আনা যেতে পারে। রেল সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে সেই প্রযুক্তি আনা হলেও তা কার্যকর না করে ফেলে রাখা হয়েছে।

কেন? রেলের এক কর্তার কথায়, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেরি এড়ানো সম্ভব বটে, কিন্তু প্রকল্পটি রূপায়ণ অনেক সময়ের ব্যাপার।

‘‘এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুরাহার সব আশাও তাই কুয়াশায় ঢাকা,’’ বলছেন এক রেলকর্তা। দুর্ঘটনা এড়াতে তহবিলের টাকা

fog train journey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy