মুসহর সম্প্রদায়ের গ্রামে গিয়ে যোগী আদিত্যনাথ স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ কর্মসূচির উজ্বোধন করেছেন। কিন্তু যোগীর এই সফরের আগে স্থানীয় প্রশাসন যে অভিনব তৎপরতা দেখিয়েছে, তা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। —ফাইল চিত্র।
আগে সাবান মেখে সাফ-সুতরো হতে হবে, কাচা জামা-কাপড় পরতে হবে, গায়ে সুগন্ধীও দিতে হবে। তবেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ মিলবে। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এমনই নাকি নির্দেশ পৌঁছেছিল ‘মুসহর’ সম্প্রদায়ের কাছে। সাবান-শ্যাম্পু-ওয়াশিং পাউডার অবশ্য জেলা প্রশাসনই জুগিয়েছে। কিন্তু যে ভাবে একটি গোটা সম্প্রদায়ের মানুষকে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে নিতে হবে, তাতে কুশীনগরের মুসহর সম্প্রদায় অপমানিতই বোধ করেছে। অভিযোগ সামনেই আসতেই জোর হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে।
গত শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচিতে যোগ দেন। এনসেফেলাইটিস প্রতিরোধের লক্ষ্যে আয়োজিত সেই কর্মসূচিতে স্থানীয় লোকজনেরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্মসূচির আগে স্থানীয় মুসহর সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় সাবান, শ্যাম্পু এবং ওয়াশিং পাউডারের প্যাকেট। জেলা প্রশাসনের তরফেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সাবান এবং শ্যাম্পু মেখে ভাল ভাবে স্নান করে, কাচা জামাকাপড় পরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যেতে হবে, এমন নির্দেশই নাকি দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। গায়ে সুগন্ধী মেখে যাওয়ার পরামর্শও নাকি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ সম্প্রদায়টির। সংবাদমাধ্যমে সামনেই তাঁরা এ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
এই প্রথম বার নয়, যোগীর সফরের আগে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আগেও বিতর্কে জড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন। —ফাইল চিত্র।
তফসিলি জাতির তালিকাভুক্ত মুসহর সম্প্রদায় উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে দরিদ্র সম্প্রদায়গুলির অন্যতম। মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিতে হাজির হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে যে শর্ত তাঁদের সামনে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তা যথেষ্টই অপমানজনক বলে মনে করছেন অনেকেই। উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
যোগী আদিত্যনাথের বিভিন্ন জেলা সফরের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিতে গিয়ে রাজ্যটির প্রশাসন মাঝে-মধ্যেই বিতর্কে জড়াচ্ছে। কিছু দিন আগেই জম্মু-কাশ্মীরে পাক হানায় শহিদ হওয়া বিএসএফ কর্মী প্রেম সাগরের বাড়ি গিয়ে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন যোগী। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছনোর আগে সেই বাড়িতে নতুন সোফা, কার্পেট পাঠায় প্রশাসন। বসানো হয় এসি মেশিনও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সফর শেষ হতেই সে সব তুলো নিয়ে যাওয়া হয়। তা নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। সে বিতর্কের রেশ মেলানোর আগেই কুশীনগরে সাবান-শ্যাম্পু বিলি করার অভিযোগ ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy