অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস
পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তও হয়েছে। কিন্তু দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী অফিসারই পরিবারের লোকজনকে বলে দিয়েছেন, জ্যোতিষীর মতে,‘মহাদোষ’ (খারাপ সময়) না কাটা পর্যন্ত সন্ধান মিলবে না এয়ার ইন্ডিয়ার নিখোঁজ মহিলা অফিসার সুলক্ষণা নারুলার। আবার তদন্তকারী অফিসারের নিজেরও ‘মহাদোষ’ চলছে। সেটা না কাটা পর্যন্ত তিনি তদন্ত শুরু করতে পারবেন না। এই ধারণা নিখোঁজের পরিবারের লোকজনকেও বিশ্বাস করিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু ক্ষেপে লাল পুলিশকর্তারা। দিল্লি পুলিশের এসিপি জসবীর সিংহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই সব ‘মহাদোষ’ তত্ত্ব বা তথ্য কোনওটাই তাঁরা মানেন না। পুলিশের রুলবুক মেনেই মহিলাকে খোঁজার চেষ্টা চলছে।
ঘটনা কী ঘটেছিল? ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান এয়ার ইন্ডিয়ার মহিলা অফিসার সুলক্ষণা নারুলা (৫৮)। তিন দিন পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। কয়েক মাস পরেও তাঁর কোনও সন্ধান না মেলায় তদন্তভার যায় দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চে। দায়িত্ব পান বিজয় সামারিয়া। তার পর থেকেই তদন্তে ‘অনুপ্রবেশ’ সামারিয়ার ব্যক্তিগত জ্যোতিষীর। তিনিই সামারিয়াকে বলেছেন, নিখোঁজ নারুলার ‘মহাদোষনা কাটা পর্যন্ত তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে না’। নারুলার ছেলে অনুভবকেও একাধিক বার ওই জ্যোতিষীর কাছে নিয়ে গিয়েছেন সামারিয়া। এবং ছেলেও এই ‘মহাদোষ’-এর তত্ত্ব কার্যত বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন।
কবে শেষ হচ্ছে সেই ‘মহাদোষ’? সামারিয়ার জ্যোতিষী বলে দিয়েছেন, ১৯ এপ্রিল শেষ হচ্ছে ওই ‘মহাদোষ’। আরও তাৎপর্যপূর্ণ, সামারিয়ার নিজেরও নাকি ‘মহাদোষ’ চলছে এবং সেটাও শেষ হবে ওই একই দিনে। আর তার আগে তদন্তই করতে পারবেন না তিনি। পরের দিন ২০ এপ্রিল দু’জনেরই ‘গ্রহদোষ’ কাটবে। জ্যোতিষী এবং সামারিয়ার মতে, তার পরই যে কোনও দিন ছেলে তাঁর নিখোঁজ মাকে দেখতে পাবেন। কোথায় দেখতে পাবেন? জ্যোতিষী বাতলে দিয়েছেন, হরিদ্বার, মথুরা, বা বৃন্দাবনে দেখতে পাবেন। সেই মতো অনুভবকে নিয়ে ওই তিন জায়গায় ঘুরেও এসেছেন তদন্তকারী অফিসার সামারিয়া।
আরও পড়ুন: হেমন্ত কারকারেকে অসম্মান সাধ্বীর, বললেন, তাঁর অভিশাপেই মৃ্ত্যু হয়েছে প্রাক্তন এটিএস কর্তার
আরও পডু়ন: শেষ টাওয়ার লোকেশন শান্তিপুর... কৃষ্ণনগরে ইভিএমের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার নিখোঁজ ঘিরে রহস্য
অবশেষে বাধ্য হয়ে পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান অনুভব। তার পরই নড়াচড়া শুরু হয় পুলিশ মহলে। এসিপি জসবীর সিংহ বলেন, আমরা বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তে বিশ্বাস করি। কিন্তু একজন ইনস্পেক্টর যদি নিখোঁজের পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে সম্পর্ক তৈরি করে তাহলে তা তদন্ত প্রভাবিত করে। আমি ওই সব জ্যোতিষশাস্ত্র বা মহাদোষের তত্ত্ব মানি না।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমরা দিল্লি এবং লাগোয়া সমস্ত হোম এবং সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছি। নিখোঁজকে উদ্ধার করতে আমরা আন্তঃরাজ্য পুলিশের সাহায্যও নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy