ভোপাল এমসে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যুবকের চোখের ভিতর থেকে বার করে আনা হল জ্যান্ত একটি পোকা। এক ইঞ্চি মাপের ওই পোকাটি যুবকের চোখে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এর ফলে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে পড়ছিল। অস্ত্রোপচারে বেশি দেরি হলে যুবক স্থায়ী ভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারতেন, জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
মধ্যপ্রদেশের ওই যুবকের বয়স ৩৫ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। দৃষ্টিশক্তি দিন দিন কমে আসছিল। মাঝেমধ্যেই চোখ জ্বালা করত, লাল হয়ে যেত। একাধিক ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছেন যুবক। অনেক ওষুধ খেয়েছেন, চোখে অনেক ওষুধ দিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। শেষে তিনি ভোপাল এমসে চোখ দেখাতে যান।
আরও পড়ুন:
উন্নত যন্ত্রপাতি দিয়ে যুবকের চোখ পরীক্ষা করে বিস্মিত হন চিকিৎসকেরা। দেখা যায়, চোখের ভিতরের তরলে একটি পোকা রয়েছে। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটি। চিকিৎসকেরা জানান, এই ধরনের ঘটনা বেশ বিরল। সারা বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, চোখের মধ্যে পোকা জীবন্ত অবস্থায় রয়েছে। পোকাটি অনবরত নড়তে থাকায় তা বার করাও বেশ কঠিন ছিল।
এমস ভোপালের প্রধান রেটিনা সার্জেন সমেন্দ্র কারকুরের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল যুবকের চোখে অস্ত্রোপচার করে। তাঁরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সময়ে পোকাটি পালানোর চেষ্টা করছিল। বার বার সরে যাচ্ছিল। কিছুতেই তাকে বাগে আনা যাচ্ছিল না। চোখের ক্ষতি না-করে পোকাটিকে বার করাই ছিল তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজ়ার রশ্মি ব্যবহার করে চোখের মধ্যে প্রথমে পোকাটিকে থামান চিকিৎসকেরা। নড়াচড়া বন্ধ হলে ধীরে ধীরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটিকে বাইরে বার করে আনা হয়।
কী ধরনের পোকা? চোখে কী ভাবে ঢুকেছিল সেটি?
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পোকাটির নাম জ্ঞাথোস্টোমা স্পিনিজেরাম। মানুষের শরীরের ভিতরে জন্ম নেয় এই পরজীবী। মূলত কাঁচা বা কম রান্না করা খাবার খেলে এই পরজীবী তৈরি হয়। শরীরের যে কোনও অংশে ঘুরে বেড়াতে পারে এরা। এমনকি, মস্তিষ্কে পৌঁছে সেখানেও ক্ষতি করতে পারে। সমেন্দ্র জানিয়েছেন, ১৫ বছর ধরে তিনি চোখের অস্ত্রোপচার করে আসছেন। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা কখনও দেখেননি। যুবকের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। কিন্তু তাঁকে আপাতত কিছু দিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ধীরে ধীরে তাঁর দৃষ্টিশক্তি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।