Advertisement
E-Paper

‘কোনও নেতাই চাপ দেননি’! সংসদে মোদীর সিঁদুর-ভাষণের পরেই ট্রাম্পের শুল্কহার ঘোষণার সম্পর্ক আছে? জল্পনা শুরু

মঙ্গলবার সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও নেতার চাপে অপারেশন সিঁদুর বন্ধ হয়নি। ভাষণে ট্রাম্পের নাম একবারের জন্য না-নিলেও অনেকের মতে, এত দিন ধরে ট্রাম্প ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে যে ভাষ্য তৈরি করেছিলেন, তা-ই খারিজ করেছেন মোদী।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৯
Donald Trump imposes 25 percent tariff on Indian goods after Narendra Modi\\\\\\\\\\\\\\\'s speech on Operation Sindoor

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রথম বার মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, কোনও নেতার চাপে অপারেশন সিঁদুর বন্ধ হয়নি। ভাষণে ট্রাম্পের নাম একবারের জন্য না-নিলেও অনেকের মতে, এত দিন ধরে ট্রাম্প ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে যে ভাষ্য তৈরি করেছিলেন, তা-ই খারিজ করেছেন মোদী। ঘটনাচক্রে, ঠিক তার পরেই ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ভারতীয় সময় অনুসারে বুধবার বিকেল ৫টা ৩৯মিনিটে সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর পোস্টে ভারতের পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, আগামী ১ অগস্ট থেকে নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে, সংসদে দাঁড়িয়ে মোদী ট্রাম্পের দাবি ‘অস্বীকার’ করেছেন বলেই কি তড়িঘড়ি ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেওয়া হল?

অনেকের মতে, সিঁদুর অভিযান নিয়ে মোদীর ভাষণের ট্রাম্পের নতুন শুল্কহার ঘোষণার যে কোনও সম্পর্কই নেই, এ কথা কেউই জোর দিয়ে বলতে পারবেন না।

Donald Trump imposes 25 percent tariff on Indian goods after Narendra Modi's speech on Operation Sindoor

ছবি: সংগৃহীত।

ভারত এবং পাকিস্তান প্রকাশ্যে সরকারি ভাবে কিছু বলার আগেই দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে এ-ও দাবি করেছিলেন, বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার সূত্রেই দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে। ঠিক তার অব্যবহিত পর ভারতের তরফে যে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছিল, তাতে অবশ্য ট্রাম্প বা আমেরিকার নামোল্লেখ ছিল না। তার পরেও বহু বার ট্রাম্প দাবি করে এসেছেন, তাঁর কারণেই দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে ভারত দীর্ঘ দিন প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। তারা শুধু বলে এসেছে, পাকিস্তানের ডিজিএমও সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ভারত তাতে রাজি হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের ভূমিকার কথা তারা স্বীকার করেনি। আবার উড়িয়ে দেয়নি। কিন্তু মঙ্গলবার মোদী যা বলেছেন প্রকাশ্যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই ভাষ্য ‘অসত্য’ হয়ে যায়। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘রুষ্ট’ হলেও হতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।

যদিও এই দাবির আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি। ভারতের তরফে সরকারি ভাবে ট্রাম্পের নয়া শুল্কহার ঘোষণা নিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। অন্য দিকে, ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, তিনি কেন অসন্তুষ্ট। সমাজমাধ্যের পোস্টে ট্রাম্প ভারতকে ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ আখ্যা দিয়েছেন ঠিকই। পাশাপাশিই জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে অসন্তুষ্ট তিনি।

সমাজমাধ্যমের পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “মনে রাখবেন, ভারত আমাদের বন্ধু হলেও, বছরের পর বছর ধরে তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা তুলনামূলক ভাবে খুব কম হয়েছে। কারণ ওরা অনেক বেশি শুল্ক নেয়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হারে শুল্ক নেওয়া দেশগুলির মধ্যে একটি। ওদের সঙ্গে ব্যবসায় অনেক বিরক্তিকর বাধা রয়েছে, যার সঙ্গে আর্থিক কোনও সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া, ওরা সব সময় নিজেদের সামরিক সরঞ্জামের একটি বড় অংশ রাশিয়া থেকে কেনে। রাশিয়ার জ্বালানি সবচেয়ে কেনে ওরা।” তাঁর দাবি ভারতের মতো চিনও রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, “যখন সকলে চাইছে রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যালীলা বন্ধ করুক, তখন এ সব কাজ ভাল নয়। তাই ভারত ২৫ শতাংশ শুল্ক দেবে।’’

ট্রাম্প প্রকাশ্যে এই কারণ দেখালেও, এটাকেই একমাত্র কারণ হিসাবে মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, যদি তা-ই হত, তা হলে শুধু শুল্কহার ঘোষণা করেই ক্ষান্ত থাকতেন তিনি। জরিমানা চাপিয়ে দিতেন না!

পাল্টা অভিমতও রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক ভাষ্যের সঙ্গে এ ভাবে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তের যোগসূত্র খোঁজা একেবারেই অমূলক। ট্রাম্প যে আসলে অনেক বেশি শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন, তা কিন্তু নয়। গত এপ্রিলে ট্রাম্প ২৬ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। যদিও তা কার্যকর হয়নি কখনওই। ট্রাম্প নিজেই সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিয়েছিলেন। তার পর দীর্ঘ দিন ধরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলেছে। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট, দু’দেশের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। তাই এই সিদ্ধান্ত। এ-ও মাথায় রাখা জরুরি যে, নতুন শুল্কহার গত এপ্রিলে ঘোষিত শুল্কহারের থেকে এক শতাংশ কম। তবে, এ কথা ঠিকই যে, নতুন শুল্কহার ভারতের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি।

Operation Sindoor PM Narendra Modi Donald Trump Donald Trump’s Tariff US Tariff War India-US Relationship
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy