পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এ বার গ্রেফতার হলেন রাজস্থানের এক যুবক। ধৃতের নাম মহেন্দ্র প্রসাদ। ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) জয়সলমেরের অতিথিশালার (গেস্ট হাউস) ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতেন মহেন্দ্র। ভারতের বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার ওই ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। অভিযোগ, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগ ছিল তাঁর। শুধু তা-ই নয়, ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজের বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্যও আইএসআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন।
রাজস্থানের সিআইডি (নিরাপত্তা) আইজি বিষ্ণুকান্ত এই গ্রেফতারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্বাধীনতা দিবসে নাশকতা বা সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটে, সে দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযানও চলছে। সেই সময়ই নজরে আসে মহেন্দ্রর বিষয়টি। তাঁর বিরুদ্ধে গোপনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কিছু তথ্য মেলে। সেই সব তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, মহেন্দ্র জয়সলমেরের ডিআরডিও-র ওই অতিথিশালায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে কাজে ঢুকেছিলেন। সামলাচ্ছিলেন ম্যানেজারের দায়িত্ব। কর্মসূত্রে জয়সলমেরে থাকলেও মহেন্দ্র আদতে উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার পালিয়ুনের বাসিন্দা। তদন্তে জানা গিয়েছে, সমাজমাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মহেন্দ্রর। তবে তাঁকে কে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে লাগিয়েছিলেন তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
গোয়েন্দা সূত্রে আরও খবর, মহেন্দ্র তাঁর হ্যান্ডলারকে ডিআরডিও-র বিজ্ঞানী এবং ভারতীয় সেনার আধিকারিকদের গতিবিধি সম্পর্রকে বিস্তারিত তথ্য দিতেন। উল্লেখ্য, ক্ষেপণাস্ত্র এবং নানা ধরনের অস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রায়শই ভারতীয় সেনার আধিকারিকেরা জয়সলমেরের চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ পরিদর্শনে আসেন। সেই সময় ওই গেস্ট হাউসেই থাকেন তাঁরা।
গ্রেফতারির পর নিরাপত্তা সংস্থাগুলি যৌথ ভাবে মহেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এখনও পর্যন্ত কী কী গোপন তথ্য তিনি পাচার করেছেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, তাঁর সঙ্গে আর কার কার যোগ রয়েছে, সেই তথ্যও খুঁজছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। যদিও প্রথম থেকে নয়াদিল্লির দাবি অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। সেই আবহে ভারত জুড়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্তকরণের কাজ শুরু করে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে গ্রেফতার হন অনেকেই। হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেফতারির পর পাক চরবৃত্তির বিষয় নিয়ে জোরকদমে তদন্ত এবং তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। তার পর একে একে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে গ্রেফতার হন অনেকেই। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল মহেন্দ্রের নাম।