নিখোঁজ: কালীরতন তালুকদার
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত খাগড়াছড়ি থেকে ভারতে তীর্থ করতে এসে নিখোঁজ এক চাকমা বৃদ্ধ। তাঁর খোঁজে উত্তর ভারত চষে ফেলে এখন কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন ছেলে কুশলয় তালুকদার। আশা, যদি কোনও ভাবে কারও সাহায্যে কলকাতা পর্ষন্ত এসে থাকেন বাবা কালীরতনবাবু।
২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে বৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের একটি দল বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে আসে। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার লেমুছড়ি গ্রামের বাসিন্দা কালীরতন তালুকদার (৬৫)-ও এই দলের সঙ্গে আসেন। বাসে চড়ে তাঁরা বুদ্ধগয়া, সারনাথ হয়ে দিল্লি পৌঁছন। দিল্লি থেকে শ্রাবস্তী যাওয়ার পথে নভেম্বরের ৮ তারিখ কুয়াশা ঢাকা ভোরে মোরাদাবাদ জেলার নিয়ামতপুর টোল প্লাজার কাছে তাঁদের বাসটি থামার পরে অনেকের সঙ্গে কালীরতনবাবুও প্রাকৃতিক প্রয়োজনে নামেন। তাঁর পাসপোর্ট, যাবতীয় অর্থ ও কাগজপত্র যে ব্যাগটিতে ছিল, সেটি বাসে তাঁর আসনেই রেখে যান। তার পরে তিনি বাসে ওঠার আগেই বাসটি ছেড়ে চলে যায়। বাস চালক জানিয়েছেন, প্রায় ৮০-৯০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, কালীরতনবাবু বাসে ওঠেননি। এর পরে তাঁরা বাস ঘুরিয়ে নিয়ামতপুরের ওই জায়গায় এসে পৌঁছন। কিন্তু ওই বৃদ্ধের কোনও খোঁজ মেলেনি।
এর পরে খবর পেয়ে কুশলয়বাবু বাবাকে খুঁজতে নিয়ামতপুরে গিয়ে হাজির হন। দিল্লি ও কলকাতার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা তাঁর সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো ছাড়া মোরাদাবাদের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দেখা করে বাবাকে উদ্ধারের আর্জি জানিয়ে আসেন। সেখানকার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেন। দিল্লি গিয়েও খোঁজখবর করেন। কিন্তু কোথাও কোনও খবর মেলেনি কালীরতনবাবুর। এ বার কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন কুশলয়। কান্নাভেজা চোখে জানালেন, ‘‘প্রায় শতবর্ষ ছোঁয়া ঠাকুমাকে এখনও খবরটা দিতে পারিনি। আমার মেয়ে আজও জানতে চেয়েছে— দাদুকে পেলে? কোনও জবাব দিতে পারিনি!’’
সোমবার কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসে যাচ্ছেন কুশলয়, সরকারি ভাবে কালীরতনবাবুকে খুঁজে বার করার যদি কোনও তৎপরতা শুরু করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy