Advertisement
E-Paper

দেশের প্রত্যেক ভোটারের জন‍্য ‘ইউনিক’ এপিক নম্বর নিশ্চিত করা হবে, ঘোষণা কমিশনের! ‘মমতারই জয়’ দেখছে তৃণমূল

নির্বাচন কমিশন জানাল, ভবিষ্যতে একই এপিক নম্বর আর থাকবে না। তার পরিবর্তে চালু করা হবে ইউনিক এপিক নম্বর। আগামী তিন মাসের মধ্যেই প্রাথমিক কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫ ১৭:৫২
এপিক নম্বর নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল নির্বাচন কমিশন।

এপিক নম্বর নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল নির্বাচন কমিশন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

একই এপিক (সচিত্র পরিচয়পত্র) নম্বরে একাধিক নাম! এই নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। এ বার এই এপিক নম্বর বিতর্কে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। তারা জানাল, ভবিষ্যতে একই এপিক নম্বর আর থাকবে না। তার পরিবর্তে চালু করা হবে ইউনিক এপিক নম্বর। আগামী তিন মাসের মধ্যেই প্রাথমিক কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। কমিশনের এই পদক্ষেপকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নৈতিক জয় হিসাবে দেখছে তৃণমূল।

‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিতর্ক চলছে। সেই আবহেই কমিশন জানাল, ‘ডুপ্লিকেট’ এপিক নম্বরের সমস্যা সমাধান করা হবে। ‘ডুপ্লিকেট’ এপিক নম্বরের ভোটারদের ইউনিক এপিক নম্বর দেবে কমিশন। ভবিষ্যতে সকল ভোটারের জন্যই ইউনিক এপিক নম্বর পদ্ধতি চালু করা হবে।

একই নম্বরে একাধিক ভোটার রয়েছেন, এমন অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আনেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ভিন্‌রাজ্যের ভোটারদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের তির ছিল নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপির দিকে। মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের আশীর্বাদ নিয়ে দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাতেও ফিল্ড সার্ভে না করে এআরও-র সাহায্যে অপারেটরদের কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ভূতুড়ে ভোটারদের নাম তোলা হচ্ছে। বাংলার ভোটারের একই এপিক কার্ডে হরিয়ানা, গুজরাতের লোকের নাম তুলছে!’’

মমতার ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামে তৃণমূল। যদিও আগে কমিশন ব্যাখ্যা করেছিল, একই এপিক নম্বরে একাধিক নাম থাকা মানেই ভুয়ো ভোটার নয়। এপিক নম্বর এক হলেও ভোটকেন্দ্র এবং বিধানসভা কেন্দ্র আলাদা হয়। তারা জানিয়েছিল, এপিক কার্ডে যে কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে সেখানেই ভোট দেওয়া যাবে। অন্য কোথাও না।

যদিও কমিশনের ব্যাখ্যা মানতে নারাজ ছিল তৃণমূল। অভিযোগ করে, একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটারের যে ব্যাখ্যা কমিশন দিয়েছে, তা খোদ কমিশনেরই নিয়ম-বহির্ভূত, বেআইনি। ‘ভূতুড়ে’ ভোটার তাড়াতে ময়দানে নামার নির্দেশ দেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। দলের গোটা সংগঠনকে ‘ভূতুড়ে’ ভোটার খোঁজার কাজে নামতে বলেন মমতা। সেইমতো জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতৃত্ব ‘ভূতুড়ে’ ভোটার খুঁজতে শুরু করেছে। সেই আবহেই কমিশনের এই বিজ্ঞপ্তিকে মমতার নৈতিক জয় হিসাবে দেখছে বাংলার শাসকদল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের আন্দোলনের নৈতিক জয়। তাই নির্বাচন কমিশন এই কথা বলতে বাধ্য হল। দিল্লিতে এবং মহারাষ্ট্রে যা করেছে, সেই চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গিয়েছে।’’ তার পরই কুণাল জানান, কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জারির পরও ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনিতে কোনও রকম শিথিলতা করবে না তৃণমূল।

কমিশনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। তবে তারা এ-ও জানিয়েছে, কমিশন এই অবস্থান আগেই ঘোষণা করেছিল। নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করল। উল্লেখ্য, ইউনিক এপিক নম্বর নিয়ে যে তাদের আপত্তি নেই, তা প্রথম থেকেই বলে আসছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এক জনের সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বরের সঙ্গে আর এক জনের নম্বর মিলে গিয়ে থাকলে, তা সংশোধন করে দেওয়া যেতেই পারে, সেই কথা কমিশন আগেই জানিয়েছিল। সেটাই আরও স্পষ্ট ভাবে জানানো হল।’’ তার পরই শমীক জানান, বিজেপির দাবি ভিন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মূল দাবি হল, তৃণমূল যে বিপুল সংখ্যক ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকায় ঢুকিয়ে রেখেছে, সেগুলো বাদ দিতে হবে। সেই দাবি থেকে আমরা পিছু হটছি না।’’ এই দাবি নিয়ে আগামী মঙ্গলবার বিজেপির প্রতিনিধিদল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করবে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ১৭ লক্ষের বেশি ভুয়ো ভোটারের নাম রয়েছে। হয় তাঁদের ছবি নকল, না হয় বাবার নাম আর জন্মতারিখ মিলে যাচ্ছে, অথবা ঠিকানা মিলে যাচ্ছে। ২০২৬-এর আগে যে ভোটার তালিকা হবে, তা যেন ভুয়ো ভোটার মুক্ত তালিকা হয়, সেই দাবি জানাতেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করব।’’ বিজেপির প্রতিনিধিদলে সুকান্তের সঙ্গে থাকবেন শমীক, অমিত মালবীয় এবং ওম পাঠক।


EPIC Number Election Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy