কোনও একটি নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড তৈরি এবং ভোটার তালিকায় ভুয়ো ব্যক্তির উপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে উঠেছে। যা সংশোধনের কাজও শুরু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এ বার এই সমস্যার প্রতিকারে এক যোগে তিনটি পদক্ষেপ করার কথা জানাল কমিশন। ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া, ভোটার তথ্যের স্লিপের সংশোধন এবং বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-দের নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে তার মধ্যে। বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, একমাত্র সরকারি কর্মীরাই যাতে এই দায়িত্ব সামলাতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।
ফর্ম-৭ ভর্তি করে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করতে পারেন নাগরিকেরা। কিন্তু অনেকেই সে কাজ থেকে বিরত থেকে যান। এতে সঠিক সময়ে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার সুযোগ কমে যায়। দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদোর জানিয়েছেন, এ বার রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (আরজিআই) থেকে নিয়মিত মৃত্যু নথিভুক্তিকরণের তথ্য নেওয়া হবে। রাজ্যের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ইআরও-রা নিজেদের এলাকার সেই তথ্য পাবেন নিয়মিত। তার পরেও বিএলও-রা এলাকায় গিয়ে সেই তথ্য যাচাই করে তালিকা থেকে নাম বাদ দেবেন। ফর্ম-৭ জমা না করলেও, নিজে থেকে এই কাজ করবে কমিশন। এতে নির্ভুল ভোটার কার্ড তৈরির কাজ আরও নিখুঁত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভোটার তথ্যের স্লিপে পার্ট এবং সিরিয়াল নম্বর লেখার ধরনেও বদল করা হবে। সেগুলি থাকবে আরও বড় হরফে চোখে পড়ার মতো করে লেখা থাকবে। তাতে নিজের তথ্য দেখতে ভোটারের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই ভোটকর্মীদের ভোটার চিনতে সাহায্য করবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত, বিএলও-দের জন্য নির্দিষ্ট সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরি হবে। তাতে নাম, ছবি, দফতর, পদ এবং ফোন নম্বরের উল্লেখ থাকবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকারি কর্মীদেরই (প্রধানত প্রাথমিক শিক্ষক) বিএলও হিসেবে নিয়োগ করা রীতি। কিন্তু অনেক জায়গাতেই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বিএলও হিসেবে নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। প্রতি ভোটের আগে বিরোধীরাও এ নিয়ে সরব হন। সংশ্লিষ্টদের অনুমান, এই পরিচয়পত্র চালুর মাধ্যমে বিএলও পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রবণতায় রাশ টানতে চাইছে কমিশন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)