Advertisement
E-Paper

দিল্লির সঙ্গে আরও দৃঢ় সম্পর্ক চাইছে ইউরোপ! ‘রুশ-ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে চিন্তা থাকলেও ট্রাম্পদের দাবির বিপরীতেই হাঁটছে ইইউ

আমেরিকা চাইছে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর শুল্ক চাপাক ইউরোপীয় ইউনিয়ন। নয়াদিল্লি এবং রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত ইউরোপও। তবে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চায় না তারা। কেন? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছে ইউরোপ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৩৩
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লেয়েনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লেয়েনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে চায় ইউরোপ। বুধবার এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, বাণিজ্য-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আরও নিবিড় সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করতে চায় তারা। মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নিয়ে আমেরিকার মতো উদ্বেগ রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন, ভারতের উপর শুল্ক চাপাক ইউরোপও। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বুধবারের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, নয়াদিল্লি-মস্কো সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পথেই এগোতে চায় তারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত হুমকির জটিলতা গোটা বিশ্বে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও দ্রুত বদল আসছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা। তবে তারা এ-ও জানিয়েছে, ভারতের উচিত রাশিয়াকে সাহায্য করা বন্ধ করে দেওয়া। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবিলা করার সমস্ত দিক নিয়ে তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে বিবৃতিতে।

বস্তুত, রাশিয়া এবং বেলারুশের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ায় যোগ দিয়েছে ভারত। ওই যৌথ সামরিক মহড়ায় ৬৫টি বাহিনী পাঠিয়েছে ভারত। সম্প্রতি চিন সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সার্বিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে ইউরোপের। বুধবার ভারত প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখ্য কূটনীতিক কাজা কালাস বলেন, “(রাশিয়ার সঙ্গে) সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ, তেল কেনা, সম্পর্ক আরও গভীর করা— এগুলি সবই আমাদের সহযোগিতার পথে প্রতিবন্ধকতা।”

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ‘প্রতিবন্ধকতা’র কথা উল্লেখ করলেও নয়াদিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চায় না ইউরোপ। কালাসের বক্তব্য, ভারতের সঙ্গে তাদের দূরত্ব তৈরি হলে, ইউরোপের ‘শত্রুরাষ্ট্রগুলি’ সেই শূন্যস্থান পূরণ করার সুযোগ পেয়ে যাবে। সেই সুযোগ দিতে চাইছে না ইউরোপ। ইউরোপীয় জোটের মুখ্য কূটনীতিকের কথায়, “প্রশ্নটি হল আমরা কি এই শূন্যস্থান অন্য কাউকে পূরণ করার জন্য ছেড়ে দেব? নাকি নিজেরাই সেটা পূরণ করার চেষ্টা করব।”

বস্তুত, আমেরিকার কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি এক ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী চাইছেন, তা স্পষ্ট নয়। এক এক সময়ে, এক এক ধরনের মন্তব্য করছেন তিনি এবং তাঁর প্রশাসন। সম্প্রতি ট্রাম্প নিজেই ভারতের প্রসঙ্গে সুর নরম করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আদৌ সহজ ছিল না। শুল্কের জন্য যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরেছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা কাটানোর জন্য তাঁর প্রশাসন ভারতের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি নিজেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে চান, সে কথাও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার দিল্লিতে এসে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনাও সেরে গিয়েছে আমেরিকার প্রতিনিধিদল।

এক দিকে যখন বাণিজ্য নিয়ে এই আলোচনা চলছে, অন্য দিকে ভারতের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপানোর জন্য ইউরোপকে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্পের প্রশাসন। গত শুক্রবারও এ বিষয়ে জি-৭ গোষ্ঠী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর চাপ তৈরি করেছে আমেরিকা। তারা চায়, রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য চিন এবং ভারতের উপর শুল্ক চাপাক জি-৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বুধবারের বিবৃতিতে স্পষ্ট, তারা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বকে নষ্ট করতে চায় না।

European union EU Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy