Advertisement
E-Paper

কয়েক জনকে ধরে জেলে পুরে দিন! কৃষকদের শস্যের গোড়া পোড়ানো নিয়ে প্রশাসনকে পরামর্শ দেশের প্রধান বিচারপতির

বিভিন্ন রাজ্যে ফসল ঘরে তোলার পরে শস্যের গোড়া পোড়ানোর চল রয়েছে। বিশেষ করে পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশের একাংশে এটি বেশি দেখা যায়। শস্যের গোড়া পোড়ানোর জেরে বাতাসের গুণমান খারাপ হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৮
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। —ফাইল চিত্র।

শস্যের গোড়া পোড়ানোর কারণে রাজধানী দিল্লিতে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত মামলায় এ বার কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের মন্তব্য, ‘‘কয়েক জনকে ধরে জেলে পাঠিয়ে দিন।’’ তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ করা হলেই সকলের কাছে সঠিক বার্তা দেওয়া যাবে। সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, এটি কোনও নিয়মিত (রুটিন) পদক্ষেপ নয়। তবে সকলকে বার্তা দেওয়ার জন্য এটি করা প্রয়োজন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গবই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ জানিয়েছে, শস্যের গোড়া পোড়ানোর জেরে যে বায়ুদূষণ হচ্ছে, তা কমাতে হবে। শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে গ্রেফতারি-সহ কৃষকদের বিরুদ্ধে কিছু কড়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, কৃষকেরা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার মানে এই নয় যে, তাঁদের লাগামহীন ভাবে শস্যের গোড়া পোড়াতে দেওয়া যাবে।

বস্তুত, বিভিন্ন রাজ্যে ফসল ঘরে তোলার পরে শস্যের গোড়া পোড়ানোর চল রয়েছে। বিশেষ করে পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশের একাংশে এটি বেশি দেখা যায়। ফসল তুলে নেওয়ার পরে পরবর্তী শস্য রোপণের জন্য চাষের খেত পরিষ্কার করার এটি অন্যতম সহজ এবং সস্তা উপায়। তবে শস্যের গোড়া পোড়ানোর জেরে বাতাসের গুণমান খারাপ হয়। এর ফলে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লির বায়ু উল্লেখযোগ্য মাত্রায় দূষিত হয় বলে লক্ষ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

বুধবার পঞ্জাব সরকারের হয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী রাহুল মেহরা। তাঁর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনারা কৃষকদের বিরুদ্ধে কিছু শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কথা কেন ভাবেন না? যদি কিছু লোককে জেলে পাঠানো যায়, তবেই এটি সঠিক বার্তা দেবে। যদি সত্যিই পরিবেশ রক্ষা আপনাদের উদ্দেশ্য হয়, তা হলে লজ্জা কিসের?”

প্রধান বিচারপতি এ-ও জানান, তিনি সংবাদপত্রে পড়েছেন, শস্যের গোড়া জৈব জ্বালানি হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এটিকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হিসাবে দেখতে পারি না। কৃষকেরা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের জন্যই আমরা খেতে পাচ্ছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরা নিজেদের পরিবেশ রক্ষা করব না।”

শস্যের গোড়া পোড়ানোর জেরে বাতাসের গুণমান খারাপ হওয়া নিয়ে আগেও বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। এগুলি বন্ধ করতে পর্যাপ্ত আইনি কাঠামোর অভাব নিয়ে অতীতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টও। গত বছরের অক্টোবরে পঞ্জাব এবং হরিয়ানার মুখ্যসচিবদেরও তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। বুধবার পঞ্জাব সরকারের আইনজীবী জানান, গত তিন বছরে পরিস্থিতি অনেকটা সামাল দেওয়া গিয়েছে। গত বছরে শস্যের গোড়া পোড়ানো কমেছিল। এ বছর তা আরও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

এই মামলায় আদালতবান্ধব হিসাবে আইনজীবী অপরাজিতা সিংহকে নিযুক্ত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তিনি বুধবার জানান, শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করার জন্য সরকারের তরফে কৃষকদের উৎসাহ দিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। এ অবস্থায় আরও কড়া পদক্ষেপের পরামর্শ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। পঞ্জাবের আইনজীবী জানান, আগেও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই ছোট কৃষক। ধৃতদের কারও কারও খুবই স্বল্প পরিমাণ জমি রয়েছে। তাঁদের যদি জেলে পুরে দেওয়া হয়, তবে তাঁদের উপর নির্ভরশীল পরিবারগুলির কী হবে? আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, এটি কোনও নিয়মিত প্রক্রিয়া নয়। তবে সকলকে বার্তা দেওয়ার জন্য এটি করা উচিত।

Supreme Court Stubble Burning Punjab Chief Justice of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy