Advertisement
E-Paper

রাসায়নিকে কঙ্কাল নিহতের মুখ, আশঙ্কায় পুলিশকর্তারা

কলকাতার পর কঙ্কাল-কাণ্ড এ বার করিমগঞ্জে। প্রাক্তন এক জঙ্গিকে খুন করে কোনও রাসায়নিকে তার মুখের মাংস গলিয়ে দিল আততায়ীরা। নিহতের দেহ উদ্ধারের পর এমনই জানিয়েছে পুলিশ। তিন দিনের পুরনো ওই মৃতদেহের অন্য সমস্ত অঙ্গ, এমনকী পোষাক অবিকৃত থাকলেও, শুধু মুখটি কঙ্কালে বদলেছে!

শীর্ষেন্দু সী

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৫ ০৩:৪১

কলকাতার পর কঙ্কাল-কাণ্ড এ বার করিমগঞ্জে।

প্রাক্তন এক জঙ্গিকে খুন করে কোনও রাসায়নিকে তার মুখের মাংস গলিয়ে দিল আততায়ীরা। নিহতের দেহ উদ্ধারের পর এমনই জানিয়েছে পুলিশ। তিন দিনের পুরনো ওই মৃতদেহের অন্য সমস্ত অঙ্গ, এমনকী পোষাক অবিকৃত থাকলেও, শুধু মুখটি কঙ্কালে বদলেছে!

এ নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে গোটা বরাকে।

করিমগঞ্জের মনাফির বাসিন্দা ছিল নরেশ রিয়াং। জঙ্গিনেতা পঞ্চুরামের বাহিনীর সদস্য ছিল সে। কয়েক বছর আগে হাইলাকান্দি পুলিশের কাছে নরেশ আত্মসমর্পণ করে। জঙ্গি সংগঠনের পুরনো শাগরেদরা তার উপর হামলা চালাতে পারে, সেই ভয়ে মনাফিতে থাকত না নরেশ। কিন্তু কয়েক দিন আগে পারিবারিক কাজে তাকে সেখানে যেতে হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ জুন রাতে নরেশকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। গত কাল বিকেলে বালুগেনাই এলাকার জঙ্গল থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের সন্দেহ, ২০ জুন তাকে খুন করা হয়েছিল। উদলা জঙ্গিনেতা রাজেশ চর্কির বাহিনীর সদস্যরা ওই ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তদন্তকারীদের সন্দেহ, যৌথ বাহিনীর গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে নরেশকে খুন করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সামনে নরেশের ছেলে চর্কি রিয়াং অবশ্য খবর পাচারের কথা স্বীকার করেছে।

কিন্তু কী ভাবে মৃতদেহের মুখের কঙ্কাল বেরিয়ে এল?

করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দেবতোষ পাল জানান, কারও মৃত্যুর ছ’ঘণ্টা পর শরীর শক্ত হতে থাকে (রিগর মরটিস)। প্রথমে পেটের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ থেকে পচন ছড়াতে শুরু করে। মৃত মানবদেহ সম্পূর্ণ ভাবে পচেগলে যেতে সাধারণ ভাবে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু নিহত নরেশের মুখমণ্ডলে এক টুকরো মাংস ছিল না। তাই তাঁরও ধারণা, বিশেষ কোনও রাসায়নিক ঢেলে তার মুখের মাংস গলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

তদন্তকারীদের বক্তব্য, নিহতের পরিচয় যাতে সহজে বোঝা না যায়, সে জন্যই এ কাজ করা হয়েছে। তবে নরেশের পোষাক দেখে তাকে শনাক্ত করেন পরিজনরা। পুলিশ সূত্রে খবর, রাসায়নিক ব্যবহার করে মৃতের পরিচয় লুকানোর চেষ্টা এর আগেও হয়েছে করিমগঞ্জে। ২০০৪ সালে সালমা বেগম নামের এক মহিলার মৃতদেহে রাসায়নিক ঢেলে গলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল আততায়ীরা। করিমগঞ্জের লঙ্গাই থানায় ওই মামলার তদন্ত এখনও চলছে। আজ পর্যন্ত নিহতের ডিএনএ পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবীন সিংহ জানান, রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে নিহত ওই প্রাক্তন জঙ্গির মুখের মাংস গলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তদন্তকারী অফিসারকে তিনি এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে জঙ্গিদের কাছে এ ধরনের রাসায়নিক থাকাটা যথেষ্ট উদ্বেগের বলে তিনি মন্তব্য করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক দিন ধরে জেলায় নাগাড়ে বৃষ্টি পড়ছে। যেখান থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়, সেখানেও জল জমেছিল। তার জেরে মৃতদেহের মুখের মাংস গলাতে ব্যবহার করা রাসায়নিক বৃষ্টির জলে ধুয়ে যেতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। মৃতদেহের পোশাক থেকেও রাসায়নিকের নমুনা মিলতে পারে।

shirsendu shi karimganj news assam terrorist assam terrorist killed skull distorted terrorist skull
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy