Advertisement
E-Paper

এখনই ফাঁসি হচ্ছে না নিমিশার! ২৪ ঘণ্টা আগে ভারতীয় বন্দির মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখল ইয়েমেন

বুধবার ইয়েমেনে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা যায়, তাঁর মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রেখেছে ইয়েমেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩৩
নিমিশা প্রিয়া।

নিমিশা প্রিয়া। —ফাইল চিত্র।

এখনই ফাঁসি হচ্ছে না ইয়েমেনে বন্দি ভারতীয় তরুণী নিমিশা প্রিয়ার! তাঁর মৃত্যুদণ্ড আপাতত স্থগিত রেখেছেন ইয়েমেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বুধবার (১৬ জুলাই) ইয়েমেনে তাঁর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে কত দিন পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হয়েছে, নতুন কোনও দিন স্থির করা হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

কেরলের পালক্কাড়ের বাসিন্দা নিমিশা নার্সের কাজ নিয়ে ২০০৮ সালে ইয়েমেনে গিয়েছিলেন। পরে ২০১৭ সালে এক ব্যবসায়িক সঙ্গীকে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হন নিমিশা। তাঁর ফাঁসির নির্দেশ দেয় ইয়েমেনের আদালত। সেই থেকে তাঁর ফাঁসি আটকানোর জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিমিশার পরিবারের সদস্যেরা। ভারত সরকারের সাহায্য চান তাঁরা। ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টেও সাজা মকুবের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়।

নিমিশার ফাঁসির আদেশ কার্যকর হওয়া আটকাতে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয় তাঁর পরিবার। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে বিষয়টিতে কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করে, সেই আর্জি জানান তাঁরা। তবে কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইয়েমেনে বন্দি তরুণীর মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে আর বিশেষ কিছু করার নেই ভারত সরকারের। তাঁর মৃত্যুদণ্ডের প্রসঙ্গে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণী গত সোমবার শীর্ষ আদালতে বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক। একটা পর্যায় অবধি আমরা যেতে পারতাম এবং তত দূর পর্যন্ত গিয়েওছিলাম। সরকারের আর কিছু করার নেই। ইয়েমেন নিয়ে স্পর্শকাতরতার বিষয়টি দেখুন। এই দেশটিকে (ইয়েমেন) কূটনৈতিক ভাবে ভারত স্বীকৃতি দেয়নি।” সরকারি স্তরে আর কিছু করা সম্ভব নয় বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দেন তিনি।

সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, নিমিশার পরিবারের সদস্যেরা সম্প্রতি ইয়েমেনে মামলার অন্য পক্ষের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে একটি সমাধানে পৌঁছোনোর চেষ্টা শুরু করেছে। এর জন্য তারা যাতে আরও কিছু সময় পান, তার জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়েছে ভারত সরকার। বিষয়টি স্বর্শকাতর হওয়ার পরেও ভারতীয় আধিকারিকেরা ইয়েমেনের স্থানীয় কারা কর্তৃপক্ষ এবং আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তারই ফলে মৃত্যুদণ্ড আপাতত স্থগিত করানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।

ইয়েমেনে যাওয়ার পরে স্বামী টমি থমাস এবং মেয়ের সঙ্গেই থাকছিলেন নিমিশা। পরে ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী এবং ১১ বছরের কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা ইয়েমেনেই থেকে যান। তাঁর ইচ্ছা ছিল, নিজের ক্লিনিক খুলবেন। ওই বছরই ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। মাহদি তাঁকে নতুন ক্লিনিক খুলতে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। কারণ, আইন অনুযায়ী, ইয়েমেনে নতুন ব্যবসা শুরু করতে গেলে দেশীয় অংশীদারের দরকার ছিল নিমিশার। সেইমতো ২০১৫ সালে দু’জন মিলে নতুন ক্লিনিক খোলেন। এর পর থেকেই শুরু হয় দুই অংশীদারের মতবিরোধ।

অভিযোগ, নিমিশার টাকা এবং পাসপোর্ট মাহদি কেড়ে নিয়েছিলেন। মারধর করে নাকি নিমিশাকে মাদকসেবনেও বাধ্য করেছিলেন মাহদি। আইনি কাগজপত্রে নিমিশাকে স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়ার পথও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন ওই নার্স। নিমিশার দাবি, মাহদিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। এর পর হানান নামে এক সহকর্মীর সঙ্গে মিলে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন ওই নার্স। ওই মাসেই ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান নিমিশা। সেই থেকে ইয়েমেনের জেলেই বন্দি রয়েছেন ভারতীয় যুবতী।

Nimisha Priya death sentence Yemen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy