E-Paper

ছিটকে উঠল আগুনের গোলা

ব্যবসার কাজে এসেছি রাজধানী শহরে। রবিবার কোচবিহার শহর থেকে রওনা হয়েছিলাম। সোমবার দিল্লি পৌঁছে উঠি গান্ধীনগরের হোটেলে।

সুরজ ঘোষ (সম্পাদক, কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতি)

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১২
দিল্লিতে বিস্ফোরণ স্থল।

দিল্লিতে বিস্ফোরণ স্থল। ফাইল চিত্র।

আচমকা কান ফাটানো শব্দ। মাটিও কেঁপে উঠল থরথর করে। আকাশে যেন ছিটকে উঠল আগুনের গোলা! বেশ কিছু ক্ষণ এমন চলল। কী হয়েছে বুঝতে পারছিলাম না। তবে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম!

ব্যবসার কাজে এসেছি রাজধানী শহরে। রবিবার কোচবিহার শহর থেকে রওনা হয়েছিলাম। সোমবার দিল্লি পৌঁছে উঠি গান্ধীনগরের হোটেলে। সেখান থেকে চাঁদনি চকে গিয়েছিলাম কাজের সূত্রেই। সন্ধ্যায় লাল কেল্লার কাছে একটা দোকানে বসে কথা বলছিলাম। ক’টা হবে তখন? সাতটা বাজতে যায়। হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। আকাশে আগুনের শিখা যেন ছিটকে উঠল।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি, অনেকে লাল কেল্লার উল্টো দিকে গুরুদ্বারের রাস্তা দিয়ে ছুটছেন। এক জনকে কোনও মতে থামিয়ে জানতে চাইলাম, কী হয়েছে? তিনি জানালেন, লাল কেল্লার সামনেই বড়বিস্ফোরণ হয়েছে। এক রিকশাচালক বললেন, অনেকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। চাঁদনি চকের দোকানদারেরা তখন ভয়ে মালপত্র ভিতরে ঢুকিয়ে শাটার নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যে দোকানদারের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তিনি বললেন, দোকানের মধ্যে ঢুকে আসুন চটপট। ঢুকতেই শাটার নামিয়ে দিলেন। সেখানেই বসেছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। বুঝতেই পারছিলাম না, কী করব? কী ভাবে হোটেলে ফিরব?

অনেক ক্ষণ পরে বাইরে বার হয়ে দেখি, গাড়ি বলতে গেলে কিছুই নেই। চারদিকে তখন পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। এই অবস্থায় হেঁটে ফেরা ছাড়া উপায় নেই। আতঙ্কিত লাগছিল। তা-ও হোটেলের পথ ধরলাম। অনেকটা হেঁটে, অটো ধরে শেষে হোটেলে যখন পৌঁছই, তখন রাত ৯টা বেজে গিয়েছে। হোটেলে ঢুকে খবর দেখার পরে, অস্বস্তি আরও বাড়ল। কারণ, টিভি দেখে জানতে পারলাম, হোটেল থেকে বেরিয়ে চাঁদনি চকে যাওয়ার পথে, লাল কেল্লার গেটের কাছে যেখানে নেমেছিলাম, তার কাছেই বিস্ফোরণ হয়েছে। সময়ের সামান্য এ দিক-ও দিক হলে কী হত, ভাবতে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।

কলকাতা থেকে মেয়ে ফোন করেছিল। কোচবিহার থেকে ফোন করেন পরিচিতেরাও। সবাইকে আশ্বস্ত করেছি। মঙ্গলবার কী হবে, বুঝতে পারছি না! এত দিন এমন ঘটনার কথা খবরে দেখেছি বা কাগজে পড়েছি। এ দিন যা অভিজ্ঞতা হল, তাতে রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারব না।

( অনুলিখন: অরিন্দম সাহা)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Delhi Blast

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy