Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

ভোটের কালি এড়াতে উঠোন ঝাঁট ফেসবুকের

ভারতে ভোট আগামী বছর। এটাই তাদের সবচেয়ে বড় বাজার। এখানেও যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের কলকাঠি হয়ে ওঠার অভিযোগ না ওঠে সে জন্য সব রকম চেষ্টা শুরু করেছে ফেসবুক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৪:২২
Share: Save:

আমেরিকার দিক থেকে দেখলে বুদ্ধিটা বাড়ল ভোট পালানোর পরে। কিন্তু ভারতে ভোট আগামী বছর। এটাই তাদের সবচেয়ে বড় বাজার। এখানেও যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের কলকাঠি হয়ে ওঠার অভিযোগ না ওঠে সে জন্য সব রকম চেষ্টা শুরু করেছে ফেসবুক। এক দিকে তাদের কর্তারা ভারতের রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘বোঝাচ্ছেন’, আগের ভুল ইচ্ছাকৃত ছিল না। এর সঙ্গে হাতেকলমেও যে তারা কিছু করছে, সেটাও এ বার সমানে তুলে ধরল ফেসবুক। আর সেটা করতে গিয়ে প্রমাণের আগেই আমেরিকার ভোটে নিজেদের ভুলের কথা কার্যত মেনে নিল মার্ক জুকেরবার্গের সংস্থা।

নিজেদের নিরাপদ প্রমাণে ফের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুঁজে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করার কাজ শুরু করেছে ফেসবুক। এটা অবশ্য তারা আগেও করেছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু এ বারের ধাক্কাটি বিশাল। তাই এইটুকুতেই যে চিঁড়ে ভিজবে না, সেটা বেশ স্পষ্ট। সে কারণে ভারত, ইতালি, আমেরিকার আগামী নির্বাচনগুলির কথা মাথায় রেখে তারা আজ মোট চারটি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।

কাজগুলি কী? • প্রথমেই এসেছে দেশের বেড়াকে মর্যাদা দেওয়ার কথা। এত দিন দেশের সীমা ছাড়িয়ে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়ানো ও বিশ্বজুড়ে সীমান্তহীন সমাজ গড়ার স্বপ্নই বিলিয়ে এসেছে ফেসবুক। এখন তারা বিদেশি হস্তক্ষেপ মোকাবিলার পথ খুঁজছে। • দ্বিতীয় পদক্ষেপ, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বাদ দেওয়া। কারণ, এই সব অ্যাকাউন্ট থেকেই ভুয়ো খবর, বিদ্বেষ ছড়ানো হয় বেশি। • বিজ্ঞাপনের স্বচ্ছতা বাড়ানো তাদের তিন নম্বর লক্ষ্য। • সব শেষে বলা হয়েছে ভুয়ো খবর ছড়ানো কমিয়ে আনার কথা।

এই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে গত কাল। যার বিভিন্ন অংশ লিখেছেন ফেসবুকের এক-এক জন কর্তা। ‘প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট’ বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট গাই রোসেন যেমন লিখেছেন, ‘এত দিনে প্রত্যেকেই জেনে গিয়েছেন, ২০১৬ সালে আমেরিকার ভোটের সময়ে কিছু বিদেশি শক্তি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল। ফেসবুকের মতো অনলাইন মঞ্চকে ব্যবহার করে আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা ও সন্দেহ ছড়িয়ে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন ঘটানো ছিল তাদের হামলার একটি দিক।’ এর পরেই রোসেন লিখেছেন, ‘ঘড়ির কাঁটাকে অবশ্য উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে না। তবে ভবিষ্যতে যাতে আমাদের গণতন্ত্রের উপরে এমন হামলা না হতে পারে, সেটা দেখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এবং খুবই গুরুত্ব দিয়ে আমরা সে কাজটা করছি।’

শুধু ৫ কোটি মানুষের তথ্য বেহাত হতে দেওয়াই নয়, ফেসবুকের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও বেশ কিছু অভিযোগ। অনেকেই মনে করছেন, বানানো ছবি আর সাজানো ঘটনার ভিডিয়ো, কিংবা কথাও যা ঘটেনি তেমন ‘ঘটনা’র বিবরণে ছয়লাপ হচ্ছে এর উঠোন। বিদ্বেষ ছড়ায় এমন মন্তব্য রীতিমতো উৎপাতের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। অনেকে এগুলি সম্পর্কে আপত্তিও জানান নিয়মিত। ফেসবুকের নির্বাচনী-নিরাপত্তা ও মানুষের যোগাযোগের বিষয়টি যাঁরা দেখেন, তাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন ‘প্রোডাক্ট ম্যানেজার’ সমিধ চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, কবে কে আপত্তি জানাবেন, তার অপেক্ষায় বসে না থেকে আগে থেকেই সক্রিয় হয়ে ফেসবুকের উঠোন থেকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট আর ভুয়ো খবর ঝাঁট দিচ্ছেন তাঁরা। সমিধ জানিয়েছেন, বিষয়বস্তুর সত্যাসত্য যাচাই ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ফেসবুক বিপুল বিনিয়োগ করতে চলেছে। এই ক্ষেত্রে কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE