পেঁয়াজের নামমাত্র দাম পেয়ে বিক্রির টাকা প্রধানমন্ত্রীকে পাঠালেন চাষি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
২০১০ সালে দেশের চাষিদের মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মুম্বই সফরে ভারত সরকার তাঁকে হাজির করিয়ে দেখাতে চেয়েছিল— এ দেশের চাষিরাও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেমন আধুনিক হয়ে উঠছেন।
আট বছর পরে ফের চাষিদের মুখ হয়ে উঠেছেন মহারাষ্ট্রের নাসিকের চাষি সঞ্জয় বালকৃষ্ণ শাঠে। নিজের হাতে ফলানো ৭৫০ কিলোগ্রাম পেঁয়াজ বিক্রি করে গত বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছেন ১০৬৪ টাকা। কেজি প্রতি মাত্র ১ টাকা ৪১ পয়সা! ক্ষুব্ধ স়ঞ্জয় এই টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর কাছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা করার জন্য।
নাসিক থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে নিফাডের বাসিন্দা সঞ্জয় সোমবার ফোনে বলেন, ‘‘পেঁয়াজ বিক্রি করে ওই ১০৬৪ টাকা পেতেও ১১০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ টাকা লেগেছে গাড়ি ভাড়ায়। আর দু’শো টাকা করে দুই মজুরকে দিতে হয়েছে ৪০০ টাকা। অর্থাৎ, ৭৫০ কেজি পেঁয়াজ মান্ডিতে বেচতে গিয়ে ঘর থেকে গেল আরও ৩৬ টাকা! আর ১২০ কুইন্টাল পেঁয়াজ ফলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা।’’
দুই সন্তানের বাবা সঞ্জয়ের জমি রয়েছে দু’একর। এর মধ্যে এক একরে ফলিয়েছেন পেঁয়াজ, বাকিটাতে আঙুর। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আপনারা ২৫ টাকায় পেঁয়াজ কিনছেন। আর আমরা পাচ্ছি ১-২ টাকা করে। বাকি টাকা কোথায় যাচ্ছে, কেউ জানে না। এটা সরকারের নীতি হতে পারে! তাই মোদীজিকেই টাকাটা পাঠিয়ে দিলাম।’’
চাষির উন্নতির দাবিতে গলা ফাটানো মোদীর মুখে এটা বড়সড় থাপ্পড় বলে বিরোধীরা সরব। সঞ্জয় অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি না। আমি চাই, মোদীজি বুঝুন চাষিদের কী অবস্থা!’’ চাষের জন্য সঞ্জয় ব্যাঙ্ক থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন। কী করে শোধ হবে, জানেন না। তাঁর এলাকার আর এক পেঁয়াজ চাষি খান্ডু বোরগুড়ে বলেন, ‘‘সোনা বন্ধক রেখে দু’লক্ষ টাকা নিয়েছি। নাসিক দেশের ৫০% পেঁয়াজ উৎপাদন করে। কিন্তু এখন চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy