Advertisement
E-Paper

ছেলে বিক্রি আছে! ঋণ শোধ করতে উত্তরপ্রদেশে সন্তানকে নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় বসলেন বাবা

ঋণ শোধ করার জন্য নিয়মিত অত্যাচার করতেন মহাজন। তাতেই তিতিবিরক্ত হয়ে ছেলেকেই বিক্রি করে দিতে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় বসেন ই-রিক্সাচালক রাজকুমার। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় পুলিশ মহলে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৩০
Image of the father trying to sell son to repay loan

উত্তরপ্রদেশে ছেলেকে বেচতে প্ল্যাকার্ড হাতে ফুটপাথে বসে বাবা। ছবি: সংগৃহীত।

ঋণ করে সামান্য কিছু জমি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ঋণই যে কাঁটার মতো গলায় চেপে বসবে তা কে জানত! উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে ঋণের টাকা শোধ করতে ছেলেকে বিক্রি করার জন্য রাস্তায় বসলেন বাবা। চমকে ওঠার মতো ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। ফুটপাথে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বাবা বসে আছেন। প্ল্যাকার্ডে হিন্দিতে অপটু হাতে লেখা। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘‘ছেলে বিক্রি আছে। আমি আমার ছেলেকে বিক্রি করতে চাই।’’ এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই তৎপর হয় পুলিশ। কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গেল না? প্রশ্ন সমাজমাধ্যমের।

আলিগড়ের ই-রিক্সা চালক রাজকুমার। দারিদ্রের সঙ্গে নিত্য সংঘর্ষই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ই-রিক্সাটিই রোজগারের একমাত্র উপায়। সেই রাজকুমারই নিজের ছেলেকে বিক্রি করতে ফুটপাথে বসেছেন। ৫ লক্ষ-৬ লক্ষ— যে যা দিতে চায়, ছেলেকে সেই দামেই বিক্রি করতে রাজি রাজকুমার। কিন্তু কেন ছেলে বিক্রি করতে হচ্ছে রাজকুমারকে?

সূত্রের খবর, ছোট্ট একটি জমি কেনার জন্য স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করেছিলেন রাজকুমার। কিন্তু অভিযোগ, ওই মহাজন এমন কলকাঠি নাড়েন, রাজকুমার জমি কিনতে পারেননি। ঋণ করা টাকাও জলে যায় রাজকুমারের। ঋণের দায়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েন রাজকুমার। অন্য দিকে, মহাজন টাকা তুলতে অত্যাচার শুরু করেন। রাজকুমারের অভিযোগ, একাধিক বার তাঁর পরিবারকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে করা হয়েছে মারধরও। এমনকি টাকা না পেয়ে রাজকুমারের ই-রিক্সাটিও মহাজন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সব হারিয়ে অসহায় রাজকুমার স্থির করেন, নিজের ছেলেকেই বিক্রি করে দেবেন। সেই অনুযায়ী, প্ল্যাকার্ড লিখে ফুটপাথে বসে পড়েন স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে।

‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে রাজকুমার বলেন, ‘‘টাকা ফেরত চেয়ে মহাজন মাঝেমাঝেই আমার ছেলেমেয়ের সামনে আমাকে মারধর করতেন। বাড়ি থেকে আমাদের কত বার বাইরে বার করে দিয়েছেন। আমার উপার্জনের একমাত্র পথ রিক্সাটিকেও বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছেন। থানায় গেলে ধমক দেয়। আমার এফআইআর-ও নেয়নি পুলিশ।’’ রাজকুমারের দাবি, ইতিমধ্যেই তিনি ঋণের ছ’হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাকি টাকাও ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মহাজনের অত্যাচার সীমা ছাড়ায়। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই ছেলেকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মোতাবেক ফুটপাথে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে পড়েন। এমন দৃশ্য সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। লাগে রাজনীতির রং। বিষয়টিকে প্রকৃত অমৃতকালের সঙ্গে তুলনা করে নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। তার পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। অভিযুক্ত মহাজনকে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয়। রাজকুমারও ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

father police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy