শেষ পর্যন্ত আরজেডি বিহারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ রামের বিরুদ্ধে কুটুম্বা আসনে প্রার্থী দিল না। কিন্তু বিহারে বিরোধীদের ‘মহাগঠবন্ধন’-এ ফাটল থেকেই গেল।
দীপাবলিতে আরজেডি বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৩টি আসনে নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে। আসন বণ্টন নিয়ে কংগ্রেস ও আরজেডি-র মধ্যে তুমুল সংঘাতের জেরে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, আরজেডি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধেই প্রার্থী দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত ৬০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কংগ্রেসের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনে লড়লেও কংগ্রেস এ বার তার থেকে দশটি কম, ৬০টি আসনে লড়ছে। তা সত্ত্বেও কংগ্রেসের সঙ্গে অন্তত পাঁচটি আসনে আরজেডি-র মুখোমুখি লড়াই হতে পারে। সমঝোতা না হলে সিপিআইয়ের সঙ্গেও কংগ্রেসের তিন থেকে চারটি আসনে মুখোমুখিলড়াই হবে।
সোমবার ছিল বিহারের প্রথম দফার ভোটের (৬ নভেম্বর) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। একইসঙ্গে ১১ নভেম্বর, দ্বিতীয় দফার ভোটের মনোনয়ন জমার শেষ দিন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আরজেডি প্রথমে কংগ্রেসের ১৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। শেষে খান দশেক আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার করছে। যদিও যে পাঁচটি আসনে আরজেডি প্রার্থী প্রত্যাহার করছে না, সেগুলোতেই মূলত বিরোধীদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি। বিরোধী জোটের একটি সূত্রের দাবি, এখনও সমঝোতায় পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। আরজেডি যেমন কুটুম্বাতে প্রার্থী দেয়নি, তেমন কংগ্রেসও লালগঞ্জে আরজেডি-র বিরুদ্ধে প্রার্থী প্রত্যাহার করছে।
আরজেডি, কংগ্রেসের উপরে বিরক্ত হয়ে বিহারে বিরোধী জোটের শরিক, ঝাড়খন্ডের শাসক দল জেএমএম বিহারের ছ’টি আসনে একাই লড়বে বলে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। আজ আবার জেএমএম বিহারে লড়বে না বলে ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে হুমকি দিয়েছে, বিহারে আরজেডি-কংগ্রেসের আচরণের বদলা নিতে ঝাড়খণ্ডে জোট পর্যালোচনা করা হবে। সেখানে জেএমএম প্রধান দল। কংগ্রেস, আরজেডি ছোট শরিক। কংগ্রেসের একটি সূত্রের আবার দাবি, রাহুল গান্ধীই হেমন্ত সরেনের সঙ্গে কথা বলে জেএমএম-কে একা লড়তে নিরস্ত করেছেন।
আরজেডি গত বিধানসভা নির্বাচনে ১৪৪টি আসনে লড়ে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছিল। কিন্তু সরকার গঠন করতে পারেনি। এ বার আরজেডি তার মুসলিম-যাদব বা এম-ওয়াই ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে ১৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৫টি আসনে যাদব-ওবিসি প্রার্থী করেছে। ১৮ জন মুসলিমকে প্রার্থী করা হয়েছে। ২০ জন দলিত ও এক জন জনজাতিকে প্রার্থী করেছেন তেজস্বী। ২৪ জন মহিলা প্রার্থীতালিকায় রয়েছেন। নতুন মুখ বাছতে তেজস্বী ৩৬ জন বিধায়ককে বাদ দিয়েছেন। আরজেডি-র যুব সংগঠনের সভাপতি রাজেশ যাদবের মতো বহু তরুণ তেজস্বীর প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন। পুরনো বিধায়কদের মধ্যে ৪১ জনকে ফের প্রার্থী করা হয়েছে।
আসন বন্টন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বিহারের জন্য বিভিন্ন গ্যারান্টি, ভোট চুরি নিয়ে বিরোধী জোটের প্রচার পিছনে চলে গিয়েছে। রাহুল কবে বিহারে প্রচারে যাবেন, তা নিয়ে কোনও খবর নেই। তবে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা প্রাণপুরে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে খুব শীঘ্র প্রচারে যেতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)