এই ভবনেই চলছে প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
অনেকেই সন্তানকে শৈশবে কোনও না কোনও খেলা শেখার জন্য ভর্তি করে দেন। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণের জন্য শিশুটির শরীর আদৌ তৈরি কি না, তা যেমন জানা প্রয়োজন, তেমনই জানা দরকার, খেলার সময়ে ছোট-বড় আঘাত লাগলে তার চিকিৎসার পরের ধাপে কী ধরনের রিহ্যাবের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্যও সময় মতো জরিপ করা দরকার। কিন্তু সেই সুযোগ কোথায়?
খেলোয়াড়দের জন্য এ বার তাই এক ছাদের তলায় স্পোর্টস মেডিসিনের সমস্ত চিকিৎসাকে নিয়ে আসতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এসএসকেএম হাসপাতালে এর জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন চারতলা ভবন। সেখানে ফিজ়িয়োলজি, অর্থোপেডিক, ফিজ়িক্যাল মেডিসিন, কার্ডিয়োলজি এবং সাইকায়াট্রি— সব ধরনের চিকিৎসাই মিলবে।
এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই বিভাগ চালু হলে তা রাজ্য তথা পূর্ব ভারতের মধ্যে প্রথম হবে। কারণ, কোনও মেডিক্যাল কলেজেই এক ছাতার তলায় স্পোর্টস মেডিসিনের সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।’’ সূত্রের খবর, কী ভাবে রাজ্যে সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে, তা ঠিক করতে ইতিমধ্যেই পাটিয়ালায় ‘নেতাজি সুভাষ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস’-এ ঘুরে এসেছেন হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। আগামী দিনে দিল্লির সাই-তেও যাবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: দ্বন্দ্ব ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে কাজের বার্তা অভিষেকের
স্পোর্টস মেডিসিনের একেবারে প্রথম ধাপই হচ্ছে ‘স্ক্রিনিং’। ওই পর্বেই পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে, নির্দিষ্ট কোনও খেলার জন্য সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের জিনগত কাঠামো, শরীরের গঠন, মাংসপেশি ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কতটা উপযুক্ত। ধরা যাক, এক জন বোলার মিডিয়াম পেসে বল করেন। তাঁর কাঁধের মাংসপেশি-সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কতটা সেই বোলিংয়ের জন্য উপযুক্ত, তা জানা যাবে ওই স্ক্রিনিং পর্বে। আবার স্পিন বোলিংয়ের জন্য কব্জি ও আঙুল কতটা তৈরি, তা-ও জানা যাবে স্ক্রিনিংয়ে। আগাম জানা যাবে হৃৎপিণ্ড সম্পর্কেও।
আরও পড়ুন: নওয়াজ শরিফের বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না, মোদীকে নিয়ে শেষ বইয়ে প্রণব
পরের ধাপে করা হয় আঘাতের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার। তৃতীয় ধাপে খেলোয়াড়ের কর্মক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে দরকার হয় রিহ্যাবের। এর পাশাপাশি পুষ্টি, খাদ্যাভ্যাস, মানসিক পরিস্থিতি— সবই পর্যবেক্ষণ করা হয়। সূত্রের খবর, এসএসকেএমের স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগে সব ধরনের চিকিৎসাই মিলবে। আপাতত ৪০ শয্যার ওই বিভাগে থাকবে অপারেশন থিয়েটার-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো। ভবন তৈরির পাশাপাশি আনা হচ্ছে যন্ত্রপাতিও।
কী কী থাকবে?
গোটা বিষয়টি এখনই খোলসা করতে চায়নি রাজ্য প্রশাসন। তবে জানা গিয়েছে, ওই বিভাগে এমন একটি ঘর থাকবে, যেখানে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকবে। সেখানে ট্রেড মিল বা অন্যান্য কসরত করবেন খেলোয়াড়েরা। তাতে উচ্চতাজনিত সমস্যা যেমন কাটবে, তেমনই হৃৎপিণ্ডও কতটা সহনশীল, তা বোঝা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে থাকবে একটি ছোট পুলও। শরীরের কোনও অংশে চোট পাওয়ার পরে ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা মিলবে ওই জলের তলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy