টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারত। বন্যা এবং ভূমিধসের কবলে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। পরিস্থিতি ক্রমশ আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে। তবে এখনই বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে মৌসম ভবন। গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা এবং ধসে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৪।
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অসমের। ২১ জেলায় ছয় লক্ষ ৩৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় এক লক্ষের বেশি। ২৪ ঘণ্টায় যে আট জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছ’জনই অসমের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। মণিপুর এবং অরুণাচল প্রদেশে এক জন করে মারা গিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় জল কমিশনের মতে, ব্রহ্মপুত্র নদের জল নেমাটিঘাট এবং তেজপুরে বিপদসীমার উপরে উঠে গিয়েছে। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন। অবিরাম বৃষ্টির ফলে কী ভাবে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেই সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেন হিমন্ত। অসমের শ্রীভূমি জেলাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই জেলার দু’লক্ষের বেশি বাসিন্দার কোনও না কোনও ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই ঘরছাড়া। তার পরেই রয়েছে নগাঁও। অসম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দেড় হাজারের বেশি গ্রামের ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মণিপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। ওই রাজ্যে বন্যার কবলে ক্ষতির মুখে পড়া বাসিন্দার সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। সোমবারও এই সংখ্যা ৫০ হাজারের ঘরে ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মণিপুরে ন’টি ভূমিধসের খবর মিলেছে। অরুণাচল প্রদেশের ছবিও প্রায় একই। আঞ্জাও জেলায় দেওয়াল ধসে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অরুণাচলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১। সিকিমের অবস্থাও শোচনীয়। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে সিকিম সরকার। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধবারও অসমের কিছু অংশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু অসম নয়, অরুণচল, মেঘালয়, মিজ়োরাম এবং ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।