Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

এবার বাজেটে আয়করে ছাড় বাড়ছে, ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রক কর্তার

শুধু তাই নয়, এও শোনা যাচ্ছে, বাজারে দীর্ঘমেয়াদি শেয়ার বেচার লভ্যাংশের উপর এত দিন যে কর আদায় করা হত, এ বার হয় তা তুলে দেওয়া হবে। না হলে সেই করের পরিমাণে কাটছাঁট করা হবে।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:৪৮
Share: Save:

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আমজনতার ক্ষোভ প্রশমনে কি এ বার বাজেটে চাকরিজীবীদের আয়করে ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানোর কথা ভাবছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার? লোকসভায় কেন্দ্রীয় বাজেট-প্রস্তাব পেশের মাসদেড়েক আগে অর্থমন্ত্রকের কর্তাদের তরফে সেই ইঙ্গিত মিলেছে।

শুধু তাই নয়, এও শোনা যাচ্ছে, বাজারে দীর্ঘমেয়াদি শেয়ার বেচার লভ্যাংশের উপর এত দিন যে কর আদায় করা হত, এ বার হয় তা তুলে দেওয়া হবে। না হলে সেই করের পরিমাণে কাটছাঁট করা হবে।

অর্থমন্ত্রকের কর্তারা অবশ্য বলছেন, আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে সরকারের দৃশ্যতই এই ‘জনমুখী’ সম্ভাব্য পদক্ষেপের উদ্দেশ্য, দেশের ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে জাগিয়ে তোলা।

বাজেট-প্রস্তাব বানানোর প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত অর্থমন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আমরা আয়করে ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানোর কথা ভাবছি। যাতে মানুষের পকেটে আরও বেশি পরিমাণে অর্থ থাকে।’’

ভাবা হচ্ছে কর্পোরেট ট্যাক্সের হার কমানোর কথাও। গত বাজেটে নতুন সংস্থাগুলির জন্য কর্পোরেট ট্যাক্সের পরিমাণ কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। আর পুরনো সংস্থাগুলির জন্য তা কমিয়ে করা হয়েছিল ২২ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, মানুষের হাতে বেশি টাকা থাকলেই তো তাঁদের বাজারের বিভিন্ন পণ্য কেনার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা যাবে। তাতে ক্রেতাবাজার যেমন চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তেমনই চাহিদা কমছে বলে গাড়ির মতো যে সব শিল্প ঝিমিয়ে পড়েছে, তাদেরও চাঙ্গা করে তোলা সম্ভব হবে।

দেশের মানুষ যাতে পকেটে বেশি পরিমাণে অর্থ রাখতে পারেন, সে জন্যই বাজারে শেয়ার বেচার লভ্যাংশ থেকে আদায় করা করের পরিমাণও কমানোর কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে সরকারের। সেটা হল, দীর্ঘমেয়াদি শেয়ার বেচার লভ্যাংশের উপর থেকে আদায় করা করের পরিমাণ কমানো হলে আরও বেশি বিনিয়োগকারী টেনে আনা যাবে শেয়ার বাজারে। আসবেন বিদেশি লগ্নিকারীরাও।

যাঁরা শেয়ার বাজারের হালহকিকত জানেন, তাঁরা বলছেন, শেয়ার বাজারে এই দাবিটা দীর্ঘ দিনের। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি শেয়ার বেচেন লাভের আশায়, তাঁরা কেউই সেই লভ্যাংশের উপর সরকারকে কর দিতে চান না। কিন্তু এত দিন সেই দাবি কেন্দ্রীয় বাজেটে মেনে নেওয়া হয়নি।

কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার জেরে সরকারকে এ বার একটু অন্য ভাবে ভাবতে হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। অর্থমন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনও প্রস্তাব আছে যাতে ওই কর পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়। তবে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।’’

দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার জুলাই-সেপ্টেম্বরের ত্রৈমাসিকে ৪.৫ শতাংশে নেমে গিয়েছে। যা গত ৬ বছরে সর্বনিম্ন। অথচ এক বছর আগে সেই হার ছিল ৭ শতাংশ।

এই অবনমন থেকে দেশের অর্থনীতিকে টেনে তোলার জন্যই অর্থনীতিবিদদের একাংশ সরকারকে আয়করে ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানো ও দীর্ঘমেয়াদি শেয়ার বেচার লভ্যাংশের উপর কর আদায়ের পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

দেশের অর্থনীতিকে দ্রুত চাঙ্গা করে তুলতে আরও একটি উপায়ের কথা ভাবছে অর্থমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘বাছাই করা কয়েকটি পণ্যের আমদানি শুল্কের পরিমাণ বদলানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে দেশের ঝিমিয়ে পড়া উৎপাদন শিল্পকে আবার জাগিয়ে তোলা সম্ভব হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE