বেজিঙেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে দেখা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। চিন প্রভাবিত রাষ্ট্রজোট শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এ বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে চিনে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ান উপত্যতায় ভারত এবং চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এই প্রথম ভারতের বিদেশমন্ত্রী চিনে গেলেন। এসসিও গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবার সকালে জয়শঙ্কর জিনপিঙের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, জিনপিংকে তিনি ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার অগ্রগতির বিষয়ে জানিয়েছেন। চিনের প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফ থেকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে জয়শঙ্কর লেখেন, “প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফ থেকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। সম্প্রতি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট শি-কে অবহিত করেছি।”
আরও পড়ুন:
সোমবারই চিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যান ঝেংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সেই বৈঠকে পারস্পরিক আলোচনা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়ার কথা বলে দু’পক্ষ। ২০২৪-এর অক্টোবর মাসে কাজ়ানে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং জিনপিঙের মধ্যে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল, তা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন জয়শঙ্কর এবং হ্যান ঝেং। এই সফরেই চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে জয়শঙ্করের।
সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান থেকে ভারত এবং চিনের সেনা অনেকটা সরে এলেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের কালো মেঘ পুরোপুরি কাটেনি বলেই মনে করছেন ভূ-রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় সরাসরি পাকিস্তানকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের গুরু দলাই লামার উত্তরাধিকার নিয়ে চিন যে ভাবে প্রায় প্রতি দিনই হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, তাতে নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্কের ফের অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। বস্তুত, পাকিস্তান এবং চিনের ‘সখ্য’ নিয়ে সম্প্রতি বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘সার্ক’ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় বিকল্প জোট তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে ইসলামাবাদ এবং বেজিং। এর মাঝেই জয়শঙ্করের চিন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।