প্রয়াত হলেন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ সিপিএম নেতা ভিএস অচ্যুতানন্দন। তাঁর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার দুপুরে তিরুঅনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯২৩ সালের ২০ অক্টোবর আলেপ্পি জেলায় অচ্যুতানন্দনের জন্ম। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ সরকারের জমানায় পুন্নাপ্রা ভয়েলার ধর্মঘট-আন্দোলনের মাধ্যমে প্রথম রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। ধীরে ধীরে কেরলের রাজনীতিতে ‘ভিএস’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। স্বাধীনতার পরে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে মালয়ালি নেতৃত্বের প্রথম সারিতে উঠে আসেন দ্রুত। পরিষদীয় রাজনীতিতে অচ্যুতানন্দনের অনেক নজির রয়েছে। বিধায়ক হিসাবে তিনি কেরল বিধানসভায় ছিলেন ৩৪ বছর সাত মাস ২১ দিন। যা ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’-এর এখনও পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড।
১৯৬৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির বিভাজনের সময় অচ্যুতানন্দন যোগ দিয়েছিলেন সিপিএমে। নতুন দলের প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও হয়েছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অচ্যুতানন্দন। সামলেছেন দলের রাজ্য সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব। সব মিলিয়ে ১৪ বছর কেরলের বিরোধী দলনেতা ছিলেন তিনি। সক্রিয় থাকার সময়ে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে অচ্যুতানন্দনের সংঘাত ছিল সর্বজনবিদিত। প্রকাশ্যে বিজয়নের সমালোচনা করায় পলিটব্যুরো থেকে সরতেও হয়েছিল তাঁকে।
মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শবরীমালা পদব্রজে গিয়ে তীর্থক্ষেত্র দর্শন করে বিতর্কও তৈরি করেছিলেন তিনি। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএমের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে চিঠি লিখে রাজনীতি থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য অচ্যুতানন্দন। সোমবার অচ্যুতানন্দনের মৃত্য়ুতে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা ভিএস অচ্যুতানন্দনের পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীদের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। প্রবীণ নেতার মৃত্যু জনজীবনে শূন্যতা তৈরি করবে।’’