Advertisement
E-Paper

ইরান থেকে তেল আমদানি নিয়েও ভারতের পাশে ফ্রান্স

সদ্য সমাপ্ত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ অনুরোধ করেন, ইরানের থেকে তেল আমদানির ব্যাপারে নয়াদিল্লির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক ওয়াশিংটন।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪০
মোদী ও মাকরঁ। ফাইল চিত্র।

মোদী ও মাকরঁ। ফাইল চিত্র।

কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স। এ বার ইরান থেকে তেল আমদানির বিষয়েও নয়াদিল্লির হয়ে সওয়াল করল প্যারিস।

সদ্য সমাপ্ত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ অনুরোধ করেন, ইরানের থেকে তেল আমদানির ব্যাপারে নয়াদিল্লির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক ওয়াশিংটন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের অনুরোধে ট্রাম্প সাড়া দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, উপযাচক হয়ে ভারতের জন্য দরবার করেননি মাকরঁ। সাম্প্রতিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে মাকরঁ-র। তাঁকে নিজেদের শক্তি চাহিদার কথা সবিস্তার বলেছিলেন মোদী। সেই সূত্রে মাকরঁ মধ্যাহ্নভোজের বৈঠকে ট্রাম্পকে বলেন, ইরান থেকে সব চেয়ে বেশি তেল কেনে ভারত। ওই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতের শক্তি নিরাপত্তা ক্ষতির সামনে। বিষয়টি বিবেচনা করা হোক।

সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন বিষয়ে প্যারিস যে ভাবে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়াচ্ছে, তাতে স্পষ্ট, বাণিজ্য এবং কৌশলগত কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে থাকতে চায় ফ্রান্স। বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং কৌশলগত কারণে আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের মতো মহাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের টানাপড়েন চলছে। সে ক্ষেত্রে পরমাণু সম্পর্ক, মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সমন্বয়— তিনটি
বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক লেনদেনে অগ্রগতি ঘটাচ্ছে ফ্রান্স। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বিষয়টি নিঃসন্দেহে ফ্রান্সের পক্ষে লাভজনক। তাই মাকরঁ-র এই ভারত-প্রেম!

বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে, এই অবস্থানের একটি ফল অতি সম্প্রতি হাতেনাতে পাওয়া গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চিন, ব্রিটেন এবং রাশিয়া যখন কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের বিপরীতে সওয়াল করেছিল, তখন ফ্রান্সই শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লির হয়ে লড়ে গিয়েছিল। বলেছিল, কাশ্মীর-সমস্যা দ্বিপাক্ষিক বিষয়। এটি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিবৃতি দেওয়া সঙ্গত নয়।

দীর্ঘদিন ধরে ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কের ভিত মজবুত। ষাটের দশক থেকে ফরাসি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান ভারতের বায়ুসেনার অংশ হিসেবে রয়েছে। ১৯৮৪ সালে আমেরিকা যখন তারাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হাত তুলে নিয়েছিল, পাশে দাঁড়িয়েছিল ফ্রান্স। ইসরোর জন্মলগ্ন থেকেই ফরাসি সহযোগিতা ধারাবাহিক ভাবে পেয়ে আসছে ভারত। তবে, ২০১৭ সাল থেকে লক্ষণীয় ভাবে ভারতের সামরিক ক্ষেত্রে ফরাসি অস্ত্র সরবরাহ বেড়েছে। ‘ফ্রেঞ্চ এরোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ’-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদক সংস্থাগুলি।

কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, সে দেশের মাটিতে জন্ম নেওয়া ইসলামি জঙ্গিবাদ নিয়ে ভুগছে ফ্রান্স। এ ব্যাপারে পোড়খাওয়া ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে তাদের। বৈঠকে মৌলবাদ বিরোধিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান সংক্রান্ত বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েও কথা হয়েছে মোদী ও মাকঁর-র।

India France Iran Oil
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy