উত্তর অতলান্তিক সাগরের উপর ছোট ছোট দু’টি দ্বীপ নিয়ে একটি রাষ্ট্র। নাম ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এই দেশেই বৃহস্পতিবার গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আর এই সফরে তাঁর মুখে বার বার আসছে বিহার প্রসঙ্গ। হবে না-ই বা কেন, দ্বীপরাষ্ট্রটির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বিহারের প্রসঙ্গ। সে দেশের বর্তমান তথা প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরের পূর্বপুরুষেরাও থাকতেন বিহারের বক্সার জেলায়। সব মিলিয়ে ত্রিনিদাদ-বিহার ‘কানেকশন’ বেশ মজবুত।
এই আবহে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিহারের নানা জিনিসের প্রশংসা শোনা গিয়েছে মোদীর গলায়। মোদী বলেন, “বিহারের ঐতিহ্য কেবল ভারত নয়, গোটা বিশ্বের কাছে গর্বের বিষয়। গণতন্ত্র, রাজনীতি, কূটনীতি— নানা বিষয়ে কয়েক দশক ধরে বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে বিহার।” শুধু তা-ই নয়, ত্রিনিদাদের প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিহারের কন্যা’ বলেও সম্বোধন করেছেন মোদী। ঘটনাচক্রে, মোদী যেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, সেই জায়গাটির নাম পটনা স্ট্রিট। চলতি বছরের শেষ দিকেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, সেই বিষয়টিও ত্রিনিদাদ সফরে হিসাবের মধ্যে রেখেছেন মোদী। তাই বিহার থেকে ১৫ হাজার কিমি দূরে থাকলেও তিনি বিহারি অস্মিতাকে অস্ত্র করে পটনার কুর্সি দখলের অঙ্ক কষছেন বলেই মত ওই অংশটির।
আরও পড়ুন:
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোয় প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষের বাস। তাঁদের মধ্যে ৪৫ শতাংশই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অনেকেই আবার বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের ভোজপুরিভাষী জেলাগুলির বাসিন্দা। ব্রিটিশ আমলে বহু মানুষ কাজের লক্ষ্যে ভারত ছেড়ে ত্রিনিদাদে চলে এসেছিলেন। তার পর থেকে তাঁদের অনেকের উত্তরসূরিরা ওই দ্বীপরাষ্ট্রেই রয়ে গিয়েছেন। যেমন ত্রিনিদাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পূর্বপুরুষ রামলখন মিশ্র ১৮৮৯ সালে ত্রিনিদাদে বসতি স্থাপন করে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থেকে যান। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই মোদী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কমলার পূর্বপুরুষেরা বিহারের বক্সারে থাকতেন। উনি নিজেও সেখানে গিয়েছেন। মানুষ মনে করেন তিনি বিহারেরই কন্যা।”
মোদী ত্রিনিদাদের রাজধানী পোর্ট অফ স্পেনে পৌঁছোতেই ভোজপুরি লোকায়ত গান গেয়ে, ঢোল বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। সে দেশের ৩৮ জন মন্ত্রীই ভারতীয় পোশাক পরে মোদীকে স্বাগত জানান।