ছবি: সংগৃহীত।
ভূত চতুর্দশীর রাত পেরোলে কাল দেওয়ালিতে মাতবে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। রাজ্যে রাজ্যে তার আয়োজন সম্পূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বছরও দিনটি কাটাবেন জওয়ানদের সঙ্গে, কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে নৌশেরায়, রাজৌরি সীমান্ত চৌকিতে। তবে এ বারের আলোর উৎসবে ছায়া ফেলেছে তেলের দাম। সে পেট্রল-ডিজ়েলই হোক বা ভোজ্যতেল।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ দেওয়ালির আগে এ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন মোদী সরকারের। হিন্দিতে এক টুইট বার্তায় তিনি আজ লেখেন, “এটা দেওয়ালি। মূল্যবৃদ্ধি চরমে। ব্যঙ্গের বিষয় নয়। জনতার প্রতি সংবেদনশীল একটি হৃদয় যদি থাকত মোদী সরকারের।” জ্বালানির দাম নিয়ে গত কিছু দিন ধরে লাগাতার সরব রয়েছেন রাহুল। বিরোধীদের অভিযোগ, পেট্রল-ডিজ়েলে করের নামে সরকার আসলে তোলাবাজি চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে ‘ঠকিয়ে নিংড়ে’ নিচ্ছে ‘মুনাফাখোর’ সরকার। শুধু বিরোধী শিবিরেই নয়, তেলের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে বিজেপিতেও। অসমে বিজেপির বিধায়ক-নেতারাই বলছেন, “তেলের যা দাম, এ বছর প্রদীপ কম জ্বালান, ভাজাভুজি এড়িয়ে সেদ্ধ খান বেশি।” এমনও বলছেন যে, “সরকারে আছি তাই চুপ থাকতে হচ্ছে। বিরোধী শিবিরে থাকলে সরকার উল্টে দিতাম।” এখনও পর্যন্ত সরকার নিজে থেকে এ বিষয়ে কিছু করতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, দাম কমাবে তেলের কোম্পানিগুলিই।
এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের ভোটকে সামনে রেখে, অযোধ্যায় মহা ধুমধামে দেওয়ালি পালনের আয়োজন করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। বিশ্ব রেকর্ড গড়তে কাল ১২ লক্ষ প্রদীপ জ্বেলে ‘দীপোৎসব’ করবে রাজ্য সরকার। যার মধ্যে ৯ লক্ষ দীপ জ্বলবে সরযূর তীরে। গত বছর জ্বালানো হয়েছিল ৬ লক্ষ দীপ। থাকছে হলোগ্রাফ্রির মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক রামলীলা শো, লেজ়ার শো, বাজি পোড়ানোর আয়োজন। পাঁচ দিনের উৎসবে অংশ নেবেন পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের এবং নেপাল-শ্রীলঙ্কার শিল্পীরা।
দেওয়ালির আয়োজনে বিশেষ নজর কাড়ছেন দিল্লির অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকার। গত দেওয়ালিতে আপ সরকার গড়েছিল অক্ষরধাম মন্দির। এ বার মহাপূজার জন্য ৩০ ফুট উঁচু ও ৮০ ফুট চওড়া অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রতিরূপ তৈরি হয়েছে ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে। পুজো করবেন দিল্লির ঝান্ডেওয়ালা মন্দিরের পরোহিতরা। ভজন গাইবেন অনুরাধা পড়োয়াল, গণেশ বন্দনায় গীতা চন্দ্রনের দল। সন্ধে ৭টায় যা লাইভ দেখানো হবে। কেজরীওয়াল নিজে থাকবেন অনুষ্ঠানে। এই দফায় ক্ষমতায় আসার পিছনে অনেক বিজেপি ভোটারের সমর্থন ছিল। এটা স্পষ্ট হওয়ার পর থেকেই হিন্দু আচার-অনুষ্ঠানে বেশি করে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে খড়্গপুর আইআইটির এই প্রাক্তনীকে।
উত্তরাখণ্ডে ১০ কুইন্টাল ফুলে সাজানো হচ্ছে বদ্রীনাথ মন্দির। ঝাড়খণ্ড সরকার জোর দিচ্ছে গ্রামীণ মহিলাদের হস্তশিল্প সামগ্রীর বিপণনে। দেওয়ালিতে বাজির কারণে বায়ু ও শব্দ দূষণ গোটা দেশেরই চিন্তার বিষয়। মুম্বইয়ের মেয়র যে কারণে, দূষণমুক্ত দেওয়ালি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। অনেক রাজ্য বাজি পোড়ানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো কর্নাটক, পঞ্জাব ও ছত্তীসগঢ়ে সবুজ বাজির সীমিত ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দেশ জুড়ে এই উৎসবের মধ্যে সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের মনোবল বাড়াতে ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছরই তাঁদের সঙ্গে দেওয়ালি উদ্যাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গত বছর গিয়েছিলেন রাজস্থানের লোঙ্গেওয়ালা সীমান্তে। এ বার যাচ্ছেন রাজৌরি। ২০১৯-এর দেওয়ালিও সেখানে কাটিয়েছিলেন মোদী। সরকারি সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বার্তা দেবে, জঙ্গি অনুপ্রবেশ করিয়ে পাকিস্তান ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বকে টলাতে পারবে না। মোদী-রাজ্য গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল আজকের দিনটি কাটান কচ্ছ সীমান্তে সেনাদের সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy