দিল্লির জি২০-এর মঞ্চে স্থায়ী সদস্য দেশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হল আফ্রিকান ইউনিয়ন। ছবি: পিটিআই।
জি২০ এ বার বদলে যাবে জি২১-এ। আজ দিল্লির জি২০-এর মঞ্চে স্থায়ী সদস্য দেশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হল আফ্রিকান ইউনিয়ন।
আজ জি২০ সম্মেলনের প্রথম পর্বেই এই অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, সব সদস্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করেই আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য ৫৫টি দেশ। বর্তমানে যেখানে জি২০ বিশ্বের ৬৬ শতাংশ মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে, সেখানে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তির ফলে আগামী দিনে ৮০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে ওই গোষ্ঠী। এই অন্তর্ভুক্তির ফলে গ্লোবাল সাউথ-এর (গরিব, অনুন্নত রাষ্ট্র) যে দেশগুলির কথা কেউ বলে না, সেই দেশগুলির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে ভারত বলেই মনে করা হচ্ছে। আজ ওই অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ঘোষণা করার পরেই আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট আজালি আসোমানিকে মঞ্চে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে পৌঁছে দেন মোদী।
পরে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের পক্ষে সমাজমাধ্যমে বলা হয়, আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য পদপ্রাপ্তি জি২০ সম্মেলনের জন্য মাইলফলক। আজকের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব রাজনীতির সমীকরণেও পরির্তন আসতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বি্শেষ করে বাণিজ্যের প্রশ্নে আজকের ওই সিদ্ধান্ত আফ্রিকা মহাদেশে ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ এই অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মোদী বলেন, "গ্লোবাল সাউথ-এর (গরিব-অনুন্নত দেশের) কথা অধিকাংশ সময়েই শোনা হয় না। সেই কারণেই আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব ভারত দিয়েছিল।’’
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, "গত বছর ইন্দোনেশিয়াতে যখন জি২০ হয়েছিল তখন শেষ দিনে আফ্রিকান ইউনিয়নের অধ্যক্ষ তথা সেনেগালের প্রেসিডেন্ট এসে অভিযোগ করেছিলেন যে এ বারে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে চর্চা হয়নি। তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন, ভারতের প্রতিনিধিত্বে জি২০ হলে তখন অন্তর্ভুক্তির বিষয় চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। প্রধানমন্ত্রী সে সময়ে বলেছিলেন, এটাই মোদীর গ্যারান্টি।" জয়শঙ্করের দাবি, তারপর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলের কাছে তদ্বির শুরু করে ভারত। তাঁর বক্তব্য, "সম্প্রতি জোহানেসবার্গের ব্রিকস সম্মেলনে সেনেগালের প্রেসিডেন্ট মোদীর তারিফ করে বলেন, আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য কাজ করছেন।"
আজ তাই ‘টিম মোদী’ টেবিল চাপড়ে দাবি করেছে, আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০-এর ছাতার তলায় আনার কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদীরই। কিন্তু কূটনৈতিক মহল বলছে, এর আগে ইন্দোনেশিয়ার জি২০ সম্মেলনেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ প্রথম বার ওই অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে সওয়াল করেছিলেন।
তবে আফ্রিকার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সদস্য দেশগুলির মধ্যে দীর্ঘ মতপাথর্ক্য ছিল। আফ্রিকান ইউনিয়ন জি২০তে যোগ দিলে ওই গোষ্ঠী আরও প্রাণবন্ত হবে, বাজার বাড়বে, আরও বেশি সংখ্যক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব হবে ওই যুক্তিতে আমেরিকা, ভারত, চিন বা রাশিয়ার মতো ১৩টি দেশ অন্তর্ভুক্তির পক্ষে গোড়া থেকেই ছিল। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মেক্সিকো, সৌদি আরব, তুরস্কের মতো সাতটি দেশ ওই অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে ছিল। তাদের বক্তব্য, এর ফলে এই গোষ্ঠীতে ঢোকার জন্য প্রার্থী বাড়বে। দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশ-সহ অনেকেই চাপ বাড়াবে জি২০ সচিবালয়ের উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy