Advertisement
E-Paper

থাকুন, সবার আর্জি রাহুলকে

খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, তিনি গিয়েছেন দশ জনপথে সনিয়া গাঁধীর কাছে। সেখান থেকে রাহুল-সনিয়া সোজা গেলেন সংসদ ভবনে। নতুন সাংসদ হিসেবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৪:০৪
সনিয়ার সঙ্গে রাহুল গাঁধী।

সনিয়ার সঙ্গে রাহুল গাঁধী।

নিজেই গাড়ি চালিয়ে হুশ করে বেরিয়ে গেলেন রাহুল গাঁধী। তাঁকে নিয়েই গত কয়েক দিন ধরে তোলপাড় গোটা কংগ্রেস। সকাল থেকে তাঁর বাড়িতেই চলছে একের পর এক বৈঠক। যাতে তিনি ইস্তফার অনড় মনোভাব থেকে সরে আসেন। কিন্তু রাহুল গেলেন কোথায়?

খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, তিনি গিয়েছেন দশ জনপথে সনিয়া গাঁধীর কাছে। সেখান থেকে রাহুল-সনিয়া সোজা গেলেন সংসদ ভবনে। নতুন সাংসদ হিসেবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে। অমেঠী হারলেও কেরলের ওয়েনাড়ে জিতেছেন। সেই কেন্দ্রে ভোটারদের ধন্যবাদ জানাতে শীঘ্রই যাবেন রাহুল। সংসদ ভবনেই ঘিরে ধরা হল তাঁকে: ‘‘আপনার সভাপতি পদে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা কবে কাটবে?’’ এদিক-ওদিক তাকিয়ে উত্তর না দিয়ে সোজা উঠে গেলেন গাড়িতে। সনিয়াও কিছু বললেন না।

রাহুলের ইস্তফা ঘিরে পরিস্থিতি তবে কোথায় দাঁড়াল? ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তরুণ গগৈ বললেন, ‘‘রাহুল অবস্থান বদলাবেন না। দলের কয়েকজন প্রবীণের উপরে তিনি ক্ষুব্ধ। যদিও আমি চাই, তিনি থাকুন।’’

কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্র বলছে, আপাতত মাসখানেক রাহুলকে সভাপতি পদে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার মধ্যস্থতায় ‘আপাতত’ কিছুটা বরফ গলানোও গিয়েছে। কিন্তু ইস্তফার ব্যাপারে এখনও অনড় রাহুল। বরং লোকসভায় দলের নেতা হতে রাজি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সভাপতি পদে বিকল্প খুঁজে নিন। কিন্তু নেতারা তাঁকে জানিয়েছেন, ‘‘আপনার কোনও বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না। আর আপনি না থাকলে দল ভেঙে যাবে। দলের খোলনলচে বদলানোর জন্য আপনিই যা করার করুন।’’ রাহুলের সম্মতি পেলে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হতে পারে। একটি কমিটি গড়ে হারের পর্যালোচনা করা হতে পারে।

রাহুল যাতে পদ থেকে ইস্তফা না দেন, তার জন্য আজ এম কে স্ট্যালিন ফোন করে অনুরোধ করেছেন। ফারুক আবদুল্লা, লালুপ্রসাদ যাদব থেকে শরদ পওয়ার, একই অনুরোধ জানিয়েছেন। এমনকি দক্ষিণী নায়ক রজনীকান্তেরও মত, রাহুলের ইস্তফা দেওয়া উচিত নয়। দিল্লিতে শীলা দীক্ষিত বলেছেন, অতীতেও ভরাডুবির পরে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাহুলের নেতৃত্বেই ফের ঘুরে দাঁড়াবে কংগ্রেস। বীরাপ্পা মইলির বক্তব্য, ‘‘২০১৪ সালে দলের বিপর্যয়ের পরে রাহুল গাঁধীই দলকে চাঙ্গা করেছেন। তিনিই পারেন নেতৃত্ব দিতে।’’ কাল রাজস্থান কংগ্রেসও প্রস্তাব পেশ করে রাহুলকে ইস্তফা না দেওয়ার দাবি জানাবে।

রাজ্যে-রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের এ কথা প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে জানাতে হচ্ছে। কারণ রাহুল কারও সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন না। আজ সকালে প্রিয়ঙ্কা যান রাহুলের বাড়ি। তার পর একে একে সচিন পাইলট, অশোক গহলৌত, রণদীপ সুরজেওয়ালা, প্রমোদ তিওয়ারি, কে সি বেণুগোপাল, সাবিত্রী ফুলের মতো নেতারা যান। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের মতে, একমাত্র প্রিয়ঙ্কা আর বেণুগোপাল ছাড়া আর কারও সঙ্গে দেখা করেননি রাহুল। সকলে রাহুলের বাড়িতেই প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বৈঠক করে ফেরেন।

কেন এতটা অনড় রাহুল? কংগ্রেসের সূত্রের মতে, এর তিনটি কারণ। এক, সভাপতি হয়েও রাহুল অমেঠীতে হেরেছেন। তাই নিজের ও দলের হারের নৈতিক দায়িত্ব তিনি নিতে চান। দুই, কংগ্রেস গণতান্ত্রিক দল। রাজ্য নেতাদের উপর ভরসা রেখেছিলেন রাহুল। ভোটের আগে দাবি, আবদার মেনেছেন। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে নিজেদের পরিবারের গদি বাঁচাতে দলকে ডুবিয়েছেন তাঁরা। ফলে বেজায় ক্ষুব্ধ রাহুল। তিন, ভবিষ্যতে যাতে শুধু গাঁধী পরিবারের উপরেই আঙুল না ওঠে, তাই পরিবারের বাইরে কাউকে সভাপতি করে নিজে অন্য ভূমিকায় থাকতে চান। গত সপ্তাহে রাহুল ইস্তফা পেশের পর এক নেতা প্রশ্ন করেন, ‘‘জেনারেল যদি পালিয়ে যান, দলের কী হবে?’’ জবাবে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘আমি তো পালাচ্ছি না। সভাপতি পদে থাকব না। কিন্তু আগের থেকে বেশি শক্তি দিয়ে লড়ব।’’

Rahul Gandhi Congress Sharad Pawar লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy