Advertisement
E-Paper

জেলা উন্নয়নেও ভরসা সেই সরকারি সংস্থাই

ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো! ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এ শৌচাগার তৈরির দায়িত্ব পড়েছিল সরকারি সংস্থার ঘাড়ে। এ বার দেশের পিছিয়ে পড়া ১১৫টি জেলার উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই দায়িত্বও  সরকারি সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৩
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো! ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এ শৌচাগার তৈরির দায়িত্ব পড়েছিল সরকারি সংস্থার ঘাড়ে। এ বার দেশের পিছিয়ে পড়া ১১৫টি জেলার উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই দায়িত্বও সরকারি সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে। সরকারি কর্তারা স্বীকার করছেন, ‘‘কর্পোরেট জগতকে অনুরোধ করা হয়েছিল। শিল্পপতিদের উপর তো ছড়ি ঘোরানো যায় না। অগত্যা সরকারি সংস্থাই ভরসা।’’

মোদী সরকার দেশের ১১৫টি জেলাকে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-পরিকাঠামোর মতো মাপকাঠিতে ‘সবচেয়ে অনগ্রসর’ বলে চিহ্নিত করেছে। লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে প্রধানমন্ত্রী চান, সরকারি সংস্থাগুলি তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে এই জেলাগুলির উন্নয়নে খরচ করুক। এর রূপরেখা ঠিক করতেই মঙ্গলবার নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার সরকারি সংস্থার শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বিরোধীদের কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, ‘‘অনেক শিল্পপতিই মোদী-ঘনিষ্ঠ বলে শোনা যায়। অথচ উন্নয়নে নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারি সংস্থার উপরেই।’’

সরকারি সূত্রের খবর, শৌচাগার তৈরিতেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিই রক্ষাকর্তা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প বলে গ্রামের স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা প্রকাশ্য স্থানে শৌচাগার তৈরিতে কে কত খরচ করবে, প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন সরকারি সংস্থার কর্তারা। জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকেও নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিটি ব্যাঙ্কের শাখায় সিএসআর খাত থেকে আমজনতার ব্যবহার্য শৌচাগার তৈরি করতে হবে। তা পরিচ্ছন্ন রাখার দায়ও নিতে হবে।

ব্যাঙ্কগুলি বিপাকে। তাদের যুক্তি, একটি শৌচাগার তৈরিতে ৫০ হাজার টাকা না হয় খরচ হল। কিন্তু ব্যাঙ্কের মধ্যে উটকো লোক ঢুকলে মুশকিল। শহরে ব্যাঙ্কের সঙ্গে শৌচাগার তৈরি করতে হলে আলাদা জমি নিতে হবে। তার সংস্থান কী ভাবে হবে?

তবু নাছোড় অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো ২০১৯-এর মধ্যে প্রকাশ্য স্থানে মলত্যাগ-মুক্ত ভারত তৈরি করতে যা অর্থ প্রয়োজন, তার সবটা কোষাগার থেকে বরাদ্দ সম্ভব নয়।’’ একই ভাবে, পিছিয়ে পড়া জেলার উন্নয়নেও সরকারি সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলির সিএসআর খাত থেকে টাকা খরচ করতে চাইছে কেন্দ্র। এপ্রিলে সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মোদী। সেখানেই তিনি বলেন, সিএসআর খাত থেকে যেমন খুশি খরচ না করে, তা থিম-ভিত্তিক হওয়া উচিত। একটা ভাল থিম হল, নীতি আয়োগের চিহ্নিত করা ১১৫টি অনগ্রসর জেলার উন্নয়ন। প্রধানমন্ত্রীর সেই ইচ্ছাপূরণের রূপরেখা তৈরি করতেই নীতি আয়োগ মাঠে নামছে। সিএসআর খাত থেকে কী কী প্রকল্পে টাকা খরচ হতে পারে, তার নকশা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্তাদের সামনে তুলে ধরবেন উপাধ্যক্ষ।

নরেন্দ্র মোদীর এই উন্নয়ন-যজ্ঞে নেই পশ্চিমবঙ্গ। নীতি আয়োগ রাজ্যের যে জেলাগুলিকে অনগ্রসর বলে চিহ্নিত করেছে, তা রাজ্য সরকার মানতে রাজি নয়। ফলে সিএসআর-এর টাকাও সেখানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।

Aspirational Districts Central Government Niti Aayog
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy