সরকারি খরচে ব্রহ্মপুত্রের একটি চর রাতারাতি বদলে ফেলা হয়েছে অস্থায়ী ‘রিসর্ট’-এ। বিলাসবহুল লঞ্চকে সাজানো হয়েছে আলোর মালায়। ব্রহ্মপুত্রের বুকের বালির চরে পাতা লাল কার্পেট। দু’পাশে আলোক রেখায় ‘ভিভিআইপি পাথওয়ে’। রাত পর্যন্ত ডিস্কো আলো আর ব্যান্ডের গান। সেই গানের শব্দ ব্রহ্মপুত্রের এ পারেও শোনা গিয়েছে। আম-জনতার কষ্ট লাঘব করতে ডাকা জিএসটি পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে গুয়াহাটিতে আসা ভিভিআইপি অতিথিদের জন্য এই ‘মহোৎসব’ (কংগ্রেস বলছে মোচ্ছব) নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে অসমের বিজেপি সরকার।
দিল্লি থেকে আসা মন্ত্রী-আমলারা জানান, জিএসটি পরিষদের বৈঠক উপলক্ষ্যে অসম সরকারের তরফে যে চার পাতার আমন্ত্রণ পত্র এসেছিল, তা দেখে অনেকেরই চোখ কপালে ওঠে। অসম সরকারের তরফে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এই বৈঠকের ‘হোস্ট’। তাঁর শহরেই বৈঠক। স্বভাবতই তাঁর চার পাতার আমন্ত্রণ পত্রে অর্থনীতি বা রাজনীতির কচকচানি ছিল না। ছিল বিনোদনের ফিরিস্তি। বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের অনেকেই বয়স্ক। কিছু ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীরাই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। তাই রিভার ক্রুজ, ব্রহ্মপুত্রের চরে পার্টি, কাজিরাঙা সফর-সহ মন্ত্রী-আমলাদের বিনোদনের তালিকা দেখে বর্ষীয়ান মন্ত্রীরাও ঢোঁক গিলছেন।
গত কাল রাত পর্যন্ত ‘করুয়া চরে’ চলে খানাপিনার পার্টি। তা নিয়ে আজ সমালোচনায় মুখর হয় কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে, এত নেতা-মন্ত্রীর থাকা-খাওয়া, রিভার ক্রুজ, চরে রিসর্ট তৈরি—সব মিলিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।’’ তাঁর মতে, নোট বাতিল, জিএসটির দাপটে জনতার নাভিশ্বাস উঠছে। এই অবস্থায় আম-জনতার টাকা দিয়ে এই উৎসব দৃষ্টিকটূ এবং অনৈতিক।
অবশ্য হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে পাঠানো এসএমএসের জবাবে তিনি লিখেছেন, ‘‘অতিথিদের আপ্যায়ন করা অসমের ঐতিহ্য। তেমন কোনও বাড়াবাড়ি করা হয়নি।’’