E-Paper

দেখে চেনার জো নেই, তবু কিছু দেহ হস্তান্তর

স্বজনহারাদের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পিকে মিশ্র এ দিনই আমদাবাদে এসে পৌঁছন। দুর্ঘটনাস্থল হয়ে সিভিল হাসসপাতাল থেকে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ মেলানোর প্রক্রিয়াও তিনি খতিয়ে দেখেন।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ০৭:৪৭

—ফাইল চিত্র।

স্বজনহারাদের ক্ষোভের মধ্যেই বিমান দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ হস্তান্তরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে গুজরাত প্রশাসন। রবিবার রাত পর্যন্ত খবর, সংশ্লিষ্ট পরিবারের হাতে ৩৮টি মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। একটি দেহ সুরাতে— মৃতের বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছে। ৪৫টি দেহের ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা মিলে গিয়েছে। কিন্তু বাকি রিপোর্ট কবে আসবে, এবং কত দিনেই বা সব দেহ আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া যাবে তার স্পষ্ট উত্তর মিলছে না।

স্বজনহারাদের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পিকে মিশ্র এ দিনই আমদাবাদে এসে পৌঁছন। দুর্ঘটনাস্থল হয়ে সিভিল হাসসপাতাল থেকে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ মেলানোর প্রক্রিয়াও তিনি খতিয়ে দেখেন। প্রশ্নের মুখে আমদাবাদ বি জে মেডিক্যাল কলেজের অতিরিক্ত সুপার রজনীশ পটেল রবিবার বলেন, ‘‘ডিএনএ পরীক্ষা করে মৃতদেহ শনাক্ত করা জটিল পদ্ধতি। সময় তো লাগবেই। এক জনের দেহ অন্য কারও পরিবারের হাতে চলে গেলে কী হবে?’’

বি জে মেডিক্যাল কলেজের মর্গের কাছে বিশাল সামিয়ানা খাটানো হয়েছে। তার নীচেই অপেক্ষায় অনেকে। আলাদা ঘর থেকে পর পর কফিন বার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সমস্ত নথিপত্র মিলিয়ে নিশ্চিত হয়ে মৃতদেহের নাম ধরে ঘোষণা করা হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরেই প্রস্তুত অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছে যাচ্ছে মর্গের সামনে। কফিনে ভরা দেহ নিয়ে তা বেরিয়ে যাচ্ছে। মৃতের পরিজনদের তরফে অনেকেই গুজরাত প্রশাসন স্বচ্ছ ভাবে তথ্য জানাচ্ছেন না বলে অভিযোগও করেছেন। তাই প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর সাংবাদিক বৈঠক করে তথ্য জানানো শুরু করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই অতিরিক্ত সুপার রজনীশ দাবি করেন, ‘‘শনিবার রাতে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ দেওয়া হয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৮টি মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও অনেকেই সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় মৃতদেহ নিতে চাইছেন না। দেহাংশ নিয়ে যেতেও অনেকে নিমরাজি। এই সব ক্ষেত্রে মৃতদেহ ঠান্ডা ঘরেই রাখা হচ্ছে।’’

ওই তল্লাটেই পুত্র-পুত্রবধূর জন্য শেষ অপেক্ষায় থাকা অনিলভাই পটেল বললেন, ‘‘এখনও কোনও ফোন পেলাম না। পুত্রবধূ পূজার পরিবারের তরফে নানা স্তরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। লাভ হয়নি। অনেকে আবার বলছেন মৃতদেহ পেতে তিন, চার সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। কত দিন এখানে পড়ে থাকব, বুঝতে পারছি না।’’ ছেলের দেহ নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হওয়া আনন্দ খাসটিয়া বললেন, ‘‘যে ভাবে কফিনের মধ্যে দেহ ভরে বলে দেওয়া হল কোনও ভাবেই যেন কফিন খোলা না হয়, তাতে অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। শুধুমাত্র একটা কাগজের ভরসায় প্রিয়জনকে নিয়ে ফিরছি। শেষ দেখাটুকুরও সুযোগ নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Air India Plane Accident Ahmedabad Plane Crash

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy