কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ফাইল চিত্র।
মোদী পদবি অবমাননা মামলায় জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধী লোকসভার সাংসদ পদ ফিরে পাবেন কি না, বৃহস্পতিবার সে বিষয়ে রায় দিতে পারে গুজরাত হাই কোর্ট। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং সুরাত দায়রা আদালত প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে ‘অপরাধমূলক অবমাননা’ মামলার দোষী সাব্যস্ত করে দু’বছর জেলের যে সাজা দিয়েছে, তা কার্যকরের বিষয়েও রায় দিতে পারে হাই কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। তবে ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য তাঁকে ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক। সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছিলেন।
এর পর রাহুল তাঁকে দোষী ঘোষণা করার বিরুদ্ধে এবং তাঁকে দেওয়া সাজার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সুরাতেরই দায়রা আদালতে (সেশনস কোর্ট) আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা সেই আবেদন খারিজ করে সাজা কার্যকরের রায় বহাল রাখেন। ফলে সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা হাতছাড়া হয় তাঁর। প্রসঙ্গত, বিচারক মোগেরা এক সময় একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা (বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) অমিত শাহের আইনজীবী ছিলেন।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে রাহুলের আইনজীবী বিএম মঙ্গুকিয়া সুরাত দায়রা আদালতের সাজা কার্যকর করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। বিচারপতি গীতা গোপীর বেঞ্চে সেই আবেদন শুনানির জন্য নথিভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি গোপী। রাহুলের আইনজীবী পিএস চম্পানেরী আবেদনের দ্রুত শুনানির আর্জি জানাতেই বিচারপতি গোপী বলেন, ‘‘আমার কাছে নয়।’’ মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত পাঠানোর জন্য হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন তিনি। এর পর মামলাটি যায় বিচারপতি প্রচ্ছকের বেঞ্চে। একাধিক দফায় মামলার শুনানিও হয়েছে বেঞ্চে। সাজাপ্রাপ্ত রাহুলের অন্তর্বর্তিকালীন জামিন বহাল রেখেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দু’বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার হারাবেন। এবং মুক্তির পর অন্তত ছ’বছর পর্যন্ত ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু উচ্চতর আদালত রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিলে পদ ফিরে পেতে বাধা নেই। যেমন খুনের চেষ্টার অভিযোগে নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত লক্ষদ্বীপের এনসিপি সাংসদ মহম্মদ ফয়জ়ল সম্প্রতি লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন। কারণ কেরল হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy