কন্যার উপার্জনে খেতে হচ্ছে, পড়শি আর আত্মীয়দের এই কটাক্ষ তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করছিল। কন্যা রাধিকাকে খুনের জন্য এই বিষয়টিকেই কারণ হিসাবে পুলিশের কাছে দীপক যাদব দেখাতে চেয়েছেন ঠিকই, তবে আত্মীয় এবং পড়শিরা কিন্তু দীপকের এই দাবিকে মানতেই চাইছেন না। তাঁদের পাল্টা দাবি, দীপকের যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, মেয়ের উপার্জনে বসে খাওয়ার প্রয়োজনই পড়ে না। আর এখান থেকেই সন্দেহ বাড়ছে, তা হলে কি রাধিকাকে খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে? যাদব পরিবারের ঘনিষ্ঠ এবং আত্মীয়েরা কিন্তু তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
এক আত্মীয় জানিয়েছেন, বিপুল সম্পত্তির মালিক দীপক। গুরুগ্রামে কেয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। সেই সম্পত্তি থেকেই মাসে ১৫-১৭ লক্ষ টাকা আয় করেন দীপক। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বিলাসবহুল খামারবাড়িও রয়েছে। গ্রামের সকলেই জানেন যে, দীপকেরা অত্যন্ত বিত্তশালী পরিবার। এর পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, যে ব্যক্তির মাসিক আয় ১৫-১৭ লক্ষ টাকা এবং সকলেই যখন জানেন দীপকের অর্থের অভাব নেই, সেখানে কী ভাবে এই তত্ত্ব আসছে যে, ‘মেয়ের উপার্জনে খেতে হচ্ছে’ তাঁকে। আর সেই কটাক্ষের জেরেই মেয়েকে খুন করলেন তিনি? ওই আত্মীয় বলেন, ‘‘খুনের নেপথ্যে যদিও দীপক এই যুক্তিকেই খাড়া করছেন, কিন্তু তা মোটেই ঠিক নয়।’’ তা হলে কেন খুন হতে হল রাধিকাকে?
আর এক আত্মীয় এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বিপুল সম্পত্তির অধিকারী দীপক। সে কথা গ্রামের সকলেই জানেন। তাঁর আত্মীয়েরাও তা জানেন। শুধু শুধু তাঁকে কেন কটাক্ষ করতে যাবে যে, তুমি মেয়ের উপার্জনে খাচ্ছ?’’ ওই আত্মীয় আরও জানিয়েছেন, দীপক খুব মিশুকে এবং মৃদুভাষী। রাধিকাকে টেনিস খেলানোর জন্য নিজের উচ্চশিক্ষার ইচ্ছাকেও বিসর্জন দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, রাধিকা ছিলেন দীপকের নয়নের মণি। দু’লক্ষ টাকা দিয়ে মেয়েকে র্যাকেট কিনে এনে দিয়েছিলেন। ফলে যে ব্যক্তি কন্যার জন্য নিজের কেরিয়ারকেও বিসর্জন দিতে কুণ্ঠা করেননি, সেই ব্যক্তি শুধুমাত্র কটাক্ষের জেরে কন্যাকে খুন করলেন? এই যুক্তি মানতে চাইছেন না প্রতিবেশীরাও।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে রাধিকাকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বাবা দীপকের বিরুদ্ধে। রাধিকাকে পর পর পাঁচটি গুলি করেন তিনি। দু’টি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও তিনটি গুলি রাধিকার পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হরিয়ানার এই টেনিস খেলোয়াড়ের।