Advertisement
E-Paper

কেউ খেতে বসেছিলেন, কেউ রান্না করছিলেন, আচমকাই জল-কাদার স্রোত এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেল বাড়িগুলিকে

ধ্বংসস্তূপের দিকে আঙুল দিকে দেখিয়ে ভয়ার্ত মুখে বললেন এক ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুশোরও বেশি নিখোঁজ জম্মু-কাশ্মীরের কিশ্তওয়ারের হড়পা বানে। মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৫ ১৫:০৯
কিশ্তওয়াড়ের চিশোতী গ্রামে হড়পা বানের ধ্বংসলীলা। ছবি: রয়টার্স।

কিশ্তওয়াড়ের চিশোতী গ্রামে হড়পা বানের ধ্বংসলীলা। ছবি: রয়টার্স।

কেউ কি চাপা পড়ে রয়েছেন, পাথর আর কাদার স্তূপ সরিয়ে সরিয়ে দেখছিলেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করতেই বলে উঠলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত নিজের হাতে দশটা লাশ উদ্ধার করেছি। যাঁরা পালাতে পেরেছেন, তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন। যাঁরা পারেননি, তাঁরা হয় ভেসে গিয়েছেন, না হয় এই পাথর-কাদার স্তূপের নীচে চাপা পড়েছেন।’’ ধ্বংসস্তূপের দিকে আঙুল দিকে দেখিয়ে ভয়ার্ত মুখে বললেন ওই ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রে খবর দুশোরও বেশি মানুষ নিখোঁজ। মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের। আহতের সংখ্যাও শতাধিক ছাড়িয়েছে ইতিমধ্যেই।

বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের কিশ্তওয়াড়ের চিশোতী গ্রামে যে বিপর্যয় নেমে আসে, তারই বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউরে উঠেছিলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী। তাঁর কথায়, ‘‘দুপুর তখন সাড়ে ১২টা হবে। কেউ রান্নায় ব্যস্ত, কেউ খেতে ব্যস্ত ছিলেন। আচমকাই বাড়িঘরগুলি কেমন কাঁপতে শুরু করল। ভূমিকম্প হচ্ছে ভেবেছিলাম অনেকেই। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই বড় বড় পাথর, কাদা আর জলের স্রোত বাড়িগুলির উপর আছড়ে পড়ে চোখের নিমেষে ভাসিয়ে নিয়ে গেল।’’

চার দিকে তখন আর্ত চিৎকার। কিন্তু হড়পা বানের জলের শব্দে সেই চিৎকারও যেন মিলিয়ে যাচ্ছিল। একের পর এক বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে হড়পা বান। কত মানুষ সেই বাড়ির সঙ্গে ভেসে গিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। এমনই জানালেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী। গ্রামের এক মহিলা বলেন, ‘‘আমি ঘরে ছিলাম। ছুটে বেরিয়ে আসি। কোনও রকমে বেঁচেছি। বাইরে বার হতেই বাড়ির উপর আছড়ে পড়ল বিশাল জলস্রোত। দেখলাম, আমার বাড়িটা ভেসে চলে গেল।’’ আরও এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘হঠাৎ বাইরে চিৎকার শুনি। তখন খেতে বসেছিলাম। কিছু গ্রামবাসী চিৎকার করে বলছিলেন পালাও, পালাও। বুঝতে পারছিলাম না কোন দিকে পালাব।’’

পুঞ্চ থেকে কিশ্তওয়াড়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে এসেছিলেন সলাহুল হুসেন। তিনি জানান, ১২টার পর থেকে মেঘের পরিমাণ একটু একটু বাড়ছিল। সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎ জোরালো একটা আওয়াজ। তার পর তিনি দেখলেন, মাটি, পাথর, গাছ জলের স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসছে। গ্রামে ঢোকার মুখেই একটি মন্দিরের পাশে অনেক দোকান ছিল। সেই দোকানগুলিতে তখন বেশ ভিড় ছিল। হড়পা বানে সব ভেসে গিয়েছে। তার পরই সলাহুল বলেন, ‘‘নিজে হাতে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করেছি পাথর, কাদার স্তূপের নীচ থেকে। আরও অনেক লোক ওই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন।’’

Jammu and Kashmir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy