রেস্তরাঁয় একটা ২০ টাকার জলের বোতল ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে! ওই রেস্তরাঁয় বসে খাওয়ার সময় উপভোগ করার জন্য এই অতিরিক্ত টাকা ধার্য করছেন কর্তৃপক্ষ। তার পরেও কেন পরিষেবা কর আদায় করছে রেস্তরাঁগুলি। শুক্রবার রেস্তরাঁর সংগঠনগুলিকে এই প্রশ্নই করল দিল্লি হাই কোর্ট। তাদের প্রশ্ন, পরিষেবা কর আদায়ের পরে পণ্যের দামের (এমআরপি)-র উপরে অতিরিক্ত দাম কেন ধার্য করা হচ্ছে।
দিল্লি হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল হোটেল এবং রেস্তরাঁর মালিকদের সংগঠন। তাদের কাছেই পরিষেবা কর আদায়ের পরেও পণ্যের অতিরিক্ত দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি দেবেন্দ্রকুমার উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চ।
গ্রাহকদের অভিযোগের মামলায় গত মার্চে দিল্লির হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, রেস্তরাঁগুলি গ্রাহকদের থেকে ‘ছদ্ম উপায়ে এবং জবরদস্তি’ খাবারের দামের উপর পরিষেবা কর আদায় করতে পারে না। এটা জনস্বার্থের বিরোধী এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে অন্যায্য। পরিষেবা কর আদায়ের পরেও আলাদা করে পণ্য এবং পরিষেবা কর আদায় করতে পারে না রেস্তরাঁগুলি। গ্রাহকদের অভিযোগ শুনে আদালত বলেছিল, এ ধরনের পরিস্থিতিতে তারা ‘নির্বাক দর্শক’ হয়েও থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, রেস্তরাঁগুলি গ্রাহকদের থেকে তিন উপায়ে দাম আদায় করে— যে খাবার বিক্রি করে, তার দাম, রেস্তরাঁয় বসে আমেজ উপভোগ এবং পরিষেবা। বেঞ্চ বলে, ‘‘রেস্তরাঁয় বসে লোকজন যে উপভোগ করছেন, তাঁর জন্য আপনারা (রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ) এমআরপির অধিক দাম নিচ্ছেন। যে পরিষেবা দিচ্ছেন, তার জন্যও কর আদায় করছেন। আপনারা যে পরিষেবা দিচ্ছেন, তার মধ্যেই কেন রেস্তরাঁয় বসে খাওয়ার সময় উপভোগের দাম ধরছেন না? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।’’ বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরিষেবা করের মধ্যেই রেস্তরাঁয় বসে খাওয়ার সময় উপভোগের দাম ধরে নেওয়া উচিত।
মামলাকারী ন্যাশনাল রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (এনআরএআই) এবং ফেডারেশন অফ হোটেলস অ্যান্ড রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনস অফ ইন্ডিয়া (এফএইচআরএআই)-এর উদ্দেশে বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘২০ টাকার জলের বোতলের জন্য ১০০ টাকা নিচ্ছেন কেন? আপনারা উল্লেখও করছেন না, যে এই অতিরিক্ত ৮০ টাকা রেস্তরাঁর আবহের জন্য ধার্য করছেন আপনারা। এ রকম চলতে পারে না।’’ বেঞ্চের আরও বক্তব্য, ‘‘আপনারা যে পরিষেবা দিচ্ছেন, তার মধ্যেই পড়ে রেস্তরাঁর আবহ। পরিষেবার জন্য যখন আলাদা কর নিচ্ছেন, তখন অতিরিক্ত ওই ৮০ টাকা কেন নিচ্ছেন? এমআরপির অধিক দাম গ্রাহকদের থেকে কি নেওয়া উচিত?’’