Advertisement
০৫ মে ২০২৪
কিন্তু কলেজ পড়ুয়ারা জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত না বদলালে আন্দোলন চলবে।

গাড়িভাড়ার ভয়ে স্কুলছুট গঙ্গাপুর

শহর শিলচর থেকে কত আর দূরে! বড়জোর ১২ কিলোমিটার। বছর কয়েক আগেও নিয়মিত বাস চলত ওই পথ ধরে। যেত চেংদুয়ার, রতনপুর, গঙ্গাপুর গ্রামে। এখন সেই রুট স্তব্ধ। শহরে আসতে অটোভাড়া চাই ৪০ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫৩
Share: Save:

শহর শিলচর থেকে কত আর দূরে! বড়জোর ১২ কিলোমিটার। বছর কয়েক আগেও নিয়মিত বাস চলত ওই পথ ধরে। যেত চেংদুয়ার, রতনপুর, গঙ্গাপুর গ্রামে। এখন সেই রুট স্তব্ধ। শহরে আসতে অটোভাড়া চাই ৪০ টাকা। সময় বুঝে ওই দূরত্বের জন্যই কখনও তিনশো টাকা গুনতে হয়। আশপাশে নেই মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক স্কুল। ফলে গাড়িভাড়ার ভয়েই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে। এত টাকা প্রতি দিন খরচ করে পড়াশোনা তাদের কাছে বিলাসিতারই নামান্তর।

আর স্বাস্থ্য পরিষেবা? টেবিলে বিছানা পেতে রোগীকে শুইয়ে দিতে হয়। কাঁধে বয়ে সেই টেবিল ৩ কিলোমিটার নিয়ে গেলে তবেই অ্যাম্বুল্যান্স মিলতে পারে। বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে বটে, কিন্ত নেই তার। ফলে সংযোগের প্রশ্ন ওঠে না। মুশকিলে পড়তে হয় মোবাইল ফোন ব্যবহারেও। ভরসা সৌরবিদ্যুৎ। তাতেই হয় গ্রামের সবার মোবাইল চার্জ। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও চেংদুয়ার, রতনপুর, গঙ্গাপুরে এমনই হল উন্নয়নের চিত্র।

এই গ্রামগুলির পরিচিতিও কম জটিল নয়। কাছাড় জেলার শিলচর সার্কলে চেংকুড়ি তেমাথায় তাদের অবস্থান। বিধানসভা আসন হিসেবে আবার আলগাপুরের অন্তর্ভুক্ত, যা মূলত হাইলাকান্দি জেলায় পড়ে। লোকসভা আসন হল করিমগঞ্জ। ফলে উন্নয়নের প্রশ্নে সবসময় প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক টানাহ্যাচড়া লেগেই রয়েছে। আর তাই এক পশলা বৃষ্টি হলে আক্ষরিক অর্থেই চোখে সর্ষেফুল দেখেন এলাকাবাসী। কাকে বলবেন, কোথায় যাবেন— এ এক বড় প্রশ্ন তাঁদের সামনে। এলগিন নালার উপর সেতু তৈরি হয়েছে বটে, কিন্তু তার দু’পাশে হাটু-সমান কাদা। সে জন্য এলাকাবাসীকে এপার-ওপার করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। ছোট যান নিয়ে যাওয়া তো দূর, সাইকেল পারাপার করাও অসম্ভব। পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পে রাস্তার কিলোমিটার দুয়েক কিছুটা কাজ হলেও বাকি সড়ক শুধুই খানাখন্দ।

৮০-র দশকে শিলচরে যখন নগর-বাস চালু হয়, তখন এই অঞ্চলটিকে তাদের পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। কিছু দিন পর সেতু ভেঙে পড়ে। সেই থেকে গোটা এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ। সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক নিজামউদ্দিন চৌধুরী এলাকা ঘুরে প্রতিশ্রুতির বন্যা ভাসিয়েছেন। একই ভাবে সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাসও এলাকা ঘুরে যান। কিন্তু পরিস্থিতি বদলের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দু’দফায় এই কেন্দ্রে বিধায়ক হয়েছিলেন গৌতম রায়ের স্ত্রী মন্দিরা রায়, ছেলে রাহুল রায়। একাধিকবার বিধায়ক-মন্ত্রী হয়েছেন প্রয়াত শহিদুল আলম চৌধুরী। বার বার রাজপাটের পালাবদল ঘটলেও সমস্যার সমাধান হয়নি এতটুকুও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school Hike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE