Advertisement
E-Paper

হিজবুলের মডিউল খাস শ্রীনগরে, ধৃত ৩

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি রাজ্যের জঙ্গিদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গত কাল। আর মুখমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি কাশ্মীরি তরুণদের উদ্দেশে ডাক দিচ্ছেন ইসলামের আসল মুখটি তুলে ধরতে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৪:২৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি রাজ্যের জঙ্গিদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গত কাল। আর মুখমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি কাশ্মীরি তরুণদের উদ্দেশে ডাক দিচ্ছেন ইসলামের আসল মুখটি তুলে ধরতে। তাঁর মতে, পাথর ছোড়া ছেড়ে দিলে কাশ্মীরি তরুণরাই বিশ্বের এক নম্বর হয়ে উঠবে। জম্মু-কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্মকে নরমে-গরমে পথে আনার এই চেষ্টার মধ্যেই আজ হিজবুল মুজাহিদিনের একটি ‘মডিউল’-এর হদিস মিলল খাস শ্রীনগরে।

শ্রীনগরের বেমিনা এলাকার এক চৌকিতে গত কাল রাতে জম্মু ডিভিশনের কিশৎওয়ারের বাসিন্দা তিন যুবককে ধরা হয়। তাদের কাছ থেকে দু’টি চিনা পিস্তল, বেশ কিছু গুলি ও গ্রেনেডে পাওয়া গিয়েছে। এদের জেরা করেই জানা গিয়েছে শ্রীনগরের ওই জঙ্গি ‘মডিউল’টির কথা। রিয়াজ আহমেদ ওয়ানি, ইখলাক আহমেদ খান্ডে ও তৌসিফ উল নবি— ধৃত এই তিন জন হিজবুল জঙ্গি। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রিয়াজ ও ইখলাক, দু’জনেই দিল্লি বিস্ফোরণের অন্যতম চক্রী জাহাঙ্গির সারুরির সহযোগী। হিজবুলের জম্মু ডিভিশনের কম্যান্ডার জাহাঙ্গিরকে এনআইএ দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছে। দিল্লির বোমা বিস্ফোরণে জড়িত জঙ্গিদের আশ্রয় ও রসদ জুগিয়েছিল সে। ওই হামলায় ১৫ জন নিহত ও ৮০ জন আহত হন। সেই জাহাঙ্গিরের ঘনিষ্ঠ জঙ্গিদের জেরা করে পুলিশ শ্রীনগর ছাড়া আর কোথায় হিজবুলের মডিউল সক্রিয় রয়েছে তার সন্ধান চালাচ্ছে।

হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরের ক’মাস হিংসা ও অশান্তির গর্ভে চলে গিয়েছিল ভূস্বর্গ। শুরু হয় স্কুল পোড়ানো। ইদানীং সেই অশান্তি কিছুটা কমে আসায় আধাসেনার বাড়তি দু’টি ব্যাটালিয়ন কাশ্মীর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলিও খুলেছে উপত্যকায়। তবে গত সপ্তাহে বুরহানের সঙ্গী হিজবুল কম্যান্ডার আকিব বাট মারা যাওয়ার পরে জঙ্গি-প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরই সঙ্গে বিশেষ দু’ধরনের ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের।

এক, পাথর ছুড়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের অভিযান ভেস্তে দেওয়া। সেনা, আধাসেনা বা পুলিশ কোথাও জঙ্গিদের ধরতে গেলেই এলাকায় প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যাচ্ছে। তারা পাথর ছুড়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলছে। এই ভাবে জঙ্গিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে তারা।

দুই, জঙ্গিরা নিশানা করছে পুলিশের পরিবারকেও। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানে এক পুলিশ অফিসারের বাড়িতে তাণ্ডব চালায় জনা বারো জঙ্গি। ওই অফিসার তখন বাড়িতে ছিলেন না। জঙ্গিরা বলে যায়, পুলিশ তাদের ও তাদের আশ্রয়দাতাদের পরিবারকে হেনস্থা করছে, সম্পত্তি নষ্ট করছে। এ বার থেকে এর বদলা নেবে তারা।

সন্দেহ নেই, ওই ঘটনায় পুলিশের মনোবলে চিড় ধরেছে খানিকটা। ফলে এ নিয়ে কাল মুখ খোলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি শেষ পল বৈদ। তাঁর কথায়, ‘‘জঙ্গিদের এটা বুঝতে হবে, তাদেরও পরিবার আছে। পুলিশও এমনটা শুরু করলে কী হবে, সেটা যেন তারা ভেবে দেখে।’’ প্রত্যেক পুলিশকর্মীর পরিবারকে আলাদা করে নিরাপত্তা দেওয়া যে সম্ভব নয় সেটা প্রকাশ্যেই কবুল করেছেন বৈদ। তবে তিনি যে আক্ষরিক অর্থেই বদলা নেওয়ার কথা বলছেন না, সেটা বোঝাতে বৈদ বলেন, ‘‘সংঘাতটা পুলিশ ও জঙ্গিদের মধ্যে। পরিবারকে এর মধ্যে না জড়ানোই ভাল।’’

বাহিনীর মনোবল ধরে রাখতে বৈদ এই হুঁশিয়ারি দিলেও রাজ্যে শাসক জোটের বড় শরিক পিডিপি কিন্তু সতর্ক প্রতিক্রিয়াই জানিয়েছে। দলের মুখপত্রের কথায়, ‘‘একটা হুমকির বদলে আর একটা হুমকি দেওয়া উচিত নয়। তবে এটা ঠিক যে, পুলিশকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। তারা জম্মু-কাশ্মীরেরই মানুষ। একই সঙ্গে নিজেদের মানুষজনকে রক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে জঙ্গি হানা বা স্থানীয়দের পাথর ছোড়ার মতো ঘটনার।’’

Hizbul Hizbul Mujahideen module Srinagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy