Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
meghalaya

Shillong: অগ্নিগর্ভ শিলংয়ে জঙ্গিদের দাপাদাপি, বহু এলাকায় কার্ফু, ইস্তফা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

পরিস্থিতি সামলাতে আজ সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত শিলং শহর, মাওলাই, মিলিয়েম-সহ বিভিন্ন এলাকায় কার্ফু জারি করেছেন জেলাশাসক ।

শিলংয়ের রাস্তায় জ্বলছে পুলিশের গাড়ি। রবিবার।

শিলংয়ের রাস্তায় জ্বলছে পুলিশের গাড়ি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলং শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২১ ০৫:১৮
Share: Save:

ভোর রাতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এইচএনএলসি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা তথা আত্মসমর্পণ করা সাধারণ সম্পাদক চেরিস্টারফিল্ড থাঙ্খেয়কে হত্যা করেছিল মেঘালয় পুলিশ। ঘটনা নিয়ে বিরোধী দল তো বটেই শাসক দলের বিধায়কেরাও কাঠগড়ায় তুলেছেন পুলিশকে। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। আজ, স্বাধীনতা দিবসের দিনে চেরিস্টারফিল্ডের অন্ত্যেষ্টিতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে শিলং। রাতে ইস্তফা দিয়েছেন মেঘালয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাখমেন রিম্বুই। পেট্রল বোমা ছোড়া হয় মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বাসভবন নিশানা করেও। তবে কেউ হতাহত হননি।

আজ শোকযাত্রার বিরাট কনভয় শহর ঘোরার পরেই উত্তেজনা ছড়ায়। মাওলাই বাইপাসে পুলিশের গাড়ি ও অস্ত্র কেড়ে নিয়ে শহরে চক্কর কাটে চেরিস্টারফিল্ডের অনুগামীরা। পরে জ্বালানো হয় সেই গাড়ি। মাওকিনরো পুলিশ চৌকির দরজাও ভাঙা হয়। পাথর ছোড়া হয় বহু ট্রাক ও গাড়িতে। গুয়াহাটি-শিলং রোডেও আক্রান্ত হয় অনেক গাড়ি। পরিস্থিতি সামলাতে আজ সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত শিলং শহর, মাওলাই, মিলিয়েম, মাওপাট, আপার শিলং-সহ বিভিন্ন এলাকায় কার্ফু জারি করেছেন জেলাশাসক ইসাওয়ান্দা লালু। বন্ধ থাকছে সব যান চলাচল, দোকানপাট, দফতর। পূর্ব ও পশ্চিম খাসি হিল, দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিল ও রি-ভয় জেলায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। শিলং বিস্ফোরণের তদন্তের সূত্র ধরে চেরিস্টারফিল্ডের বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁকে গুলি করে মারে পুলিশ। দাবি করা হয়েছিল, ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন চেরিস্টারফিল্ড। কিন্তু পরিবারের দাবি, কিডনির কঠিন রোগে শয্যাশায়ী চেরিস্টারফিল্ড কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতেই পারেন না। তাঁর একটি হাতও অবশ। চেরিস্টারফিল্ডকে গুলি করার দু’ঘণ্টা পরে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তত ক্ষণে তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর বড় ছেলে নেইঘ্রিম হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী ও মেজ ছেলে পশুপালন দফতরের কর্মী। পুলিশ তাদেরও চেরিস্টারফিল্ডের দেহরক্ষী সন্দেহে ধরে নিয়ে যায়।

বিরোধীদের দাবি, চেরিস্টারফিল্ডকে হত্যা করে শিলং বিস্ফোরণে গোয়েন্দা ব্যর্থতা থেকে মুখ বাঁচাতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু অথর্ব মানুষ ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছে, এই কাহিনি সাজিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা। ঘটনার দায় নিয়ে রাতে পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রিম্বুই।

বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে বলেন, “মেঘালয়ে জঙ্গি সন্ত্রাসের সময়েও পুলিশ আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিদের বাড়িতে ঢুকে এ ভাবে হত্যা করেনি।” মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা এ এল হেক বলেন, “হিংসা দিয়ে হিংসা থামানো যায় না। সত্য উদ্ঘাটনের জন্য বিচারবিভাগীয় তদন্ত দরকার। কারণ পুলিশের কোনও যুক্তি ও গল্প ধোপে টিকছে না।” রাজ্য মানবাধিকার কমিশন বিবৃতিতে জানায়, সংঘর্ষ নিয়ে পুলিশি রিপোর্ট আদপেই সন্তোষজনক নয়। মুখ্য সচিবকে ১৫ দিনের মধ্যে বিশদ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এইচএনএলসি চেরিস্টারফিল্ডের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ফের হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘বিস্ফোরণে তাঁর হাত ছিল না। সংগঠনের দুই আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

meghalaya Shillong Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE