Advertisement
E-Paper

উৎসবে ভর করে অর্থনীতিতে আশা, ভরসা মহাকুম্ভেও

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, চলতি অর্থ বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হারের উন্নতি দেখা গিয়েছে। ওই তিন মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৬.২ শতাংশ।

চলতি অর্থ বছরের শেষ তিন মাস, জানুয়ারি-মার্চে মহাকুম্ভের দাক্ষিণ্যে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

চলতি অর্থ বছরের শেষ তিন মাস, জানুয়ারি-মার্চে মহাকুম্ভের দাক্ষিণ্যে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। — প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ১০:২৭
Share
Save

দেশের অর্থনীতির কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত মিলল। মোদী সরকারের আশা, মহাকুম্ভকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভর করে জানুয়ারি থেকে মার্চে অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে। কিন্তু চিন্তা থাকছে কারখানার উৎপাদন ও নতুন লগ্নি নিয়ে।

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, চলতি অর্থ বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হারের উন্নতি দেখা গিয়েছে। ওই তিন মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৬.২ শতাংশ। তার আগের তিন মাস, জুলাই-সেপ্টেম্বরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৬ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। প্রায় দু’বছরে ওই আর্থিক বৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন ছিল।

অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মূলত উৎসবের মরসুম। এই তিন মাসে বাজারে কেনাকাটা ও সরকারি খরচ বাড়ার ফলেই আর্থিক বৃদ্ধি বেড়েছে। কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রের ছবিও ভাল ছিল। কিন্তু কারখানার উৎপাদনে শ্লথ গতি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর উৎসবের মরসুম হওয়া সত্ত্বেও কারখানার উৎপাদন মাত্র ৩.৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে কারখানা উৎপাদনের বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ২.১ শতাংশ। সেই তুলনায় সামান্য উন্নতি হলেও কারখানা উৎপাদন ক্ষেত্রের ছবি মোটেই সুখদায়ক নয় বলে অর্থনীতিবিদদের মত। শিল্পোৎপাদনের সূচকেও তার প্রতিফলন মিলেছে। অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে শিল্পোৎপাদনে বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। গত অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে বৃদ্ধির হার ৬.৩ শতাংশের থেকে অনেকখানি কম। একই ভাবে নতুন পুঁজি তৈরিতে বৃদ্ধির হারও থমকে রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে নতুন পুঁজি বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৮ শতাংশ। অক্টোবর-ডিসেম্বরে নতুন পুঁজিতে বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশে আটকে গিয়েছে।

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরণের মতে, চলতি অর্থ বছরের শেষ তিন মাস, জানুয়ারি-মার্চে মহাকুম্ভের দাক্ষিণ্যে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। যে ভাবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ প্রয়াগরাজে গিয়েছেন, তাতে খরচ বেড়েছে। তার সুবাদে জানুয়ারি-মার্চে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৬ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলতে পারে। তাঁর দাবি, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ঘুরে দাঁড়িয়ে ৬.২ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলায় ভারত সবথেকে বেশি আর্থিক বৃদ্ধির হারের দেশের সিংহাসন ধরে রাখল। তাঁর মতে, ভারতের জিডিপি এখন ৩.৯ লক্ষ কোটি ডলার। চলতি অর্থ বছরেই তা ৪ লক্ষ কোটি ডলার ছাপিয়ে যাবে।

চলতি অর্থ বছরের আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের দ্বিতীয় পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪-২৫-এ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশে পৌঁছবে। প্রথম পূর্বাভাস অনুযায়ী এই হার ছিল ৬.৪ শতাংশ। পরিসংখ্যান মন্ত্রক আজ গত অর্থ বছরের আর্থিক বৃদ্ধির হার সংশোধন করে জানিয়েছে, ২০২৩-২৪-এ আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ নয়, তা ৯.২ শতাংশ ছিল। কোভিডের বছর বা ২০২১-২২ বাদ দিলে এই আর্থিক বৃদ্ধির হার গত ১২ বছরে সর্বোচ্চ।

ইওয়াই ইন্ডিয়া-র প্রধান উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ ডি কে শ্রীবাস্তবের মতে, এর অর্থ গত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরে অর্থনীতির অনেকখানি অধোগমন হয়েছে। আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ থেকে একেবারে ৬.৫ শতাংশে নেমে আসছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, মূল্যবৃদ্ধি-সহ বৃদ্ধির হার বা সংখ্যার হিসেবে আর্থিক বৃদ্ধিরও হারও গত বছরের ১২ শতাংশ থেকে চলতি অর্থ বছরে ৯.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এই কারণেই শিল্পমহলের আয় বৃদ্ধির হার কমছে।

ঠিক এই কারণে কারখানার উৎপাদনের সঙ্গে নতুন লগ্নিও মোদী সরকারের চিন্তার কারণ। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি খরচ, বেসরকারি কেনাকাটা বাড়লেও নতুন লগ্নিতে বৃদ্ধির হার গত অর্থ বছরের ৯.৮ শতাংশ থেকে চলতি অর্থ বছরে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। চলতি বছরে নতুন লগ্নির হার চার বছরে সর্বনিম্ন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kumbh Economy

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}