Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Cyber Attack

সাইবার-হানার আশঙ্কা, সতর্কিত সব হাসপাতাল

হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সাইবার-দস্যুদের পণবন্দির শিকার হচ্ছে কী ভাবে?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৩
Share: Save:

এক করোনাভাইরাসে রক্ষে নেই, দোসর সাইবার-ভাইরাস! করোনা মানুষের সৃষ্ট দানব কি না, নিঃসংশয় প্রমাণ এখনও মেলেনি। সাইবার-ভাইরাস ছড়াচ্ছে কিন্তু সাইবার-দস্যুরাই। তাদের লক্ষ্য, কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সারিয়ে তোলার হাসপাতালগুলিকে পণবন্দি করে বিপর্যয় আরও ভয়াবহ করে তোলা এবং অবশ্যই প্রচুর অর্থ আদায়। এই বিষয়ে সতর্ক করে ১৯৪টি সদস্য-দেশে বার্তা পাঠিয়েছে ইন্টারপোল।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব জুড়ে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ব্যস্ততা তুঙ্গে। ইন্টারনেটে সব চেয়ে বেশি ‘ট্র্যাফিক’ কোভিড-১৯’-কে ঘিরেই। এই কালবেলায় বেশ কয়েকটি দেশের হ্যাকারেরা সাইবার-হানার মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা অকেজো করে দিতে চাইছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশে এই ঘটনা ঘটেছে। মূলত ‘র‌্যানসমওয়্যার’ বা সাইবার-দস্যুতার মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করে তবেই হ্যাকারেরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ব্যবস্থা ফের সক্রিয় করতে দিয়েছে।

ইন্টারপোলের বার্তায় বলা হয়েছে, সাইবার ফিউশন সেন্টারের সাইবার ক্রাইম থ্রেট রেসপন্স টিম কয়েক দিন ধরে সাইবার অপরাধীদের বেড়ে চলা সক্রিয়তার উপরে নজরদারি চালিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সাইবার অপরাধীদের অধিকাংশই বিশ্বের বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, গবেষণা কেন্দ্রে লাগাতার সাইবার-হামলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যে-সব সংস্থা কোভিড-১৯ নিয়ে কাজ করছে, আপাতত সেগুলিকে নিশানা করেই এগোচ্ছে তারা। মূলত স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাকে ‘ডিজিটাল হস্টেজ’ বা পণবন্দি করাই তাদের লক্ষ্য। যাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রোগীর চিকিৎসার তথ্য না-মেলে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষার ফাইল পাওয়া না-যায়। স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের ই-ব্যবস্থাপনায় ‘তালা লাগিয়ে’ দিয়ে টাকা দাবি করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। কিছু ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে বলে সদস্য-দেশের পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছে ইন্টারপোল।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে করোনা, আবাসনে ঢুকতে বাধা স্বাস্থ্যকর্মীদের

আরও পড়ুন: করোনা: মেডিক্যালে আক্রান্ত মা, সতর্কতা

হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সাইবার-দস্যুদের পণবন্দির শিকার হচ্ছে কী ভাবে?

ইন্টারপোলের সাইবার ফিউশন সেন্টার তাদের বার্তায় জানিয়েছে, অপরাধীরা র‌্যানসমওয়্যার ছড়াচ্ছে মূলত ই-মেলের মাধ্যমে। কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান বা নামী আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থায় ই-মেল পাঠানো হচ্ছে। তাতে করোনা সংক্রান্ত তথ্য, খবরাখবর, গবেষণা, নথির কথা বলা থাকছে। অনেক হাসপাতাল বা সরকারি কর্তারা সেটি খুলছেন এবং তার পরেই হাসপাতালের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় তালা পড়ে যাচ্ছে। ইন্টারপোলের সেক্রেটারি জেনারেল জুরগেন স্টক ১৯৪টি দেশের পুলিশকে জানিয়েছেন, এই অবস্থায় কোনও হাসপাতালের সিস্টেম বেশ কিছু ক্ষণের জন্য ‘লক’ হয়ে গেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ইন্টারপোল এর প্রতিকার হিসেবে পুলিশকে জানিয়েছে, বড় বড় হাসপাতালে করোনা সংক্রান্ত ই-মেল খোলার আগে সব দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে। নিয়মিত আপডেট এবং ব্যাক আপ রাখতে হবে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের। ইন্টারপোল কয়েক দিনের মধ্যেই সন্দেহভাজন র‌্যানসমওয়্যারের তালিকা পুলিশের কাছে পাঠাবে। তার আগে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলিকে অচেনা ই-মেল না-খোলা, প্রয়োজনে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা, অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা দেখে নেওয়া এবং সব ধরনের ফাইলের ব্যাকআপ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Attack Hospitals Interpol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE