কাগজপত্র সবই অন্যের, পরিচয়ও ভাঁড়ানো! তিন বছর ধরে ডাক্তারের পরিচয়ে বেসরকারি হাসপাতাল তো বটেই, সরকারি হাসপাতালেও কাজ করে আসছিলেন! তবে এক রোগীর মৃত্যু সব পাল্টে দিল। ধরা পড়ে গেলেন যুবক।
মধ্যপ্রদেশের মার্বেল সিটি হাসপাতালে অসুস্থ মাকে ভর্তি করিয়েছিলেন মনোজ কুমার নামে রেলের এক আধিকারিক। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ওই প্রৌঢ়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকেরা মনোজকে জানান, তাঁর মাকে ভেন্টিলেটশন সাপোর্টে রাখতে হবে। রাজিও হন মনোজ। কিন্তু তার পরেও বাঁচানো যায়নি ওই প্রৌঢ়াকে। পরে এই নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে বচসা হয়। তখন তাঁকে জানানো হয়, ভেন্টিলেটশন সাপোর্টে তাঁর মাকে রাখতে রাজি হননি। যদিও হাসপাতালের সেই দাবি অস্বীকার করেন মনোজ।
কোন চিকিৎসকের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছিল, তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন মনোজ। তখনই বেরিয়ে আসে আসল গল্প! মনোজ জানতে পারেন, তাঁর মাকে যিনি চিকিৎসা করেন, তাঁর নাম ব্রিজরাজ। যদিও তাঁর আসল নাম সত্যেন্দ্র নিষাদ। তিনি আদৌ চিকিৎসক নন। নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করতেন অভিযুক্ত।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সত্যেন্দ্র তাঁর স্কুলের বন্ধু ব্রিজরাজের দ্বাদশ শ্রেণির মার্কশিট এবং অন্যান্য নথি চুরি করেছিলেন। সেই সব নথি ব্যবহার করে ২০১৮ সালে তফসিলি উপজাতি কোটায় এমবিবিএসে ভর্তি হন। পরে ডাক্তারও হন। তার পরে বিভিন্ন বেসরকারি এবং সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হন। তবে সবই ব্রিজরাজের ছদ্মনামে!
আরও পড়ুন:
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হতবাক আসল ব্রিজরাজ। পেশায় তিনি এক জন চিত্রশিল্পী। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন রোগী মারা গিয়েছেন এবং তাঁকে আমি চিকিৎসা করেছি শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার দ্বাদশ শ্রেণির রেজাল্ট-সহ অন্যান্য নথি হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আগেই করেছিলাম। এখন জানতে পারলাম কে চুরি করেছে, আর তার পরে সেই সব নথি ব্যবহার করে কী হয়েছে!’’ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সত্যেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জবলপুরের সিএমএইচও-এর তরফে।