তরুণ প্রজন্মই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। হাতিয়ার ইনস্টাগ্রামের মতো সমাজমাধ্যম। অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পরিচালনা কেন্দ্রিক বিভিন্ন ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলে ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। সেই সব চ্যানেলের বিভিন্ন পোস্টে থাকত সন্ত্রাস-বার্তা। এমনই অভিযোগ রয়েছে আল-কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার অন্যতম শীর্ষনেত্রী সামা পারভিনের বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরু থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে গুজরাত সন্ত্রাসদমন শাখা।
গত তিন বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন সামা। তবে আদতে তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে তাঁর ভাই বেঙ্গালুরুতে থাকেন। তাঁর সঙ্গেই চলে আসেন সামাও। আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তবে বর্তমানে বেকার ছিলেন তিনি। তবে সব সময় সমাজমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন সামা। ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচারমূলক ভিডিয়ো পোস্ট করে নেটাগরিকদের মধ্যে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করতেন তিনি, এমনই অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।
গুজরাতের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস) গ্রেফতার করে সামাকে। সামার গ্রেফতারির নেপথ্যে রয়েছেন তাঁরই পুরনো সঙ্গীরা! গত ২৩ জুলাই আল কায়দার সঙ্গে যোগের সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল এটিএস। গুজরাত, নয়ডা দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে মহম্মদ ফইক, মহম্মদ ফরদিন, মোদাসার সইফুল্লা কুরেশি এবং জ়েশান আলিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের সকলের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সকলেই একে অপরের পরিচিত। সমাজমাধ্যমের সাহায্যে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তাঁরা। আর এই চার জনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সামারও, এমনই দাবি তদন্তকারীদের।
পাঁচ জনের এই গ্রুপ তাদের জাল ছড়িয়ে রেখেছিল গোটা ভারতে। অভিযোগ, ভিন্ন ভিন্ন ‘টার্গেট’ দেওয়া হত তাঁদের। সীমান্তের বাইরে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সামার, দাবি তদন্তকারীদের। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার ছক কষতেন সামারা। ফইক, ফরদিনদের জেরা করে সামার হদিস পায় গুজরাতের এটিএস। সেই সূত্র ধরে বেঙ্গালুরুর মনোরমাপাল্যা এলাকার ভাড়া বাড়িতে হানা দেয় তারা। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই তরণীকে।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারী সূত্রে দাবি, ধৃত ফরদিনের কাছ থেকে মৌলবাদী এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন বইপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিরুদ্ধে আল কায়দার মতামত সংক্রান্ত নথিও ছিল ওই যুবকের কাছে। মনে করা হচ্ছে, এই সব মতামত নিয়ে আলোচনা হত পাঁচ জনের মধ্যে। সামাকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করানো হয়। ট্রানজ়িট রিমান্ডে তাঁকে গুজরাতে নিয়ে যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
তদন্তকারীদের মতে, সামাই মূল চক্রী। তবে তাঁর সঙ্গে অন্য কোন কোন সংগঠনের যোগ ছিল, সেই সূত্রও খুঁজে বার করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তাঁর যোগাযোগ, পরিকল্পনা এবং কার্যকলাপ সম্পর্কে বিশদ জানতে জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলে খবর তদন্তকারী সূত্রে।