রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোনমের সামনেই খুন করা হয়েছিল রাজাকে। শুধু তা-ই নয়, সোনমের নির্দেশ পেতেই রাজাকে পিছন থেকে মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। রাজাকে প্রথম আঘাত করেছিলেন অন্যতম অভিযুক্ত বিশাল চৌহান। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃত ‘ভাড়াটে খুনিরা’ তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, সোনম চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘‘ওকে মেরে ফেল!’’ সেই নির্দেশ পেতেই রাজার উপর হামলা চালানো হয় বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
মেঘালয় পুলিশ সূত্রে খবর, রাজার উপর যখন হামলা চালানো হচ্ছিল, সেই সময় আরও এক অভিযুক্ত আকাশ রাজপুত তাঁর বাইক নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছিলেন কেউ আসছেন কি না। শুধু তা-ই নয়, রাজাকে খুনের আগে তাঁর ভাড়া করা স্কুটিটিও কেড়ে নেওয়া হয়। স্কুটিটি আগেই উদ্ধার করেছিল পুলিশ। আকাশের বাইকটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
মেঘালয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেস্টোন টেনসাং এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২৩ মে রাজাকে খুন করা হয়। ওই সন্ধ্যাতেই শিলং থেকে গুয়াহাটি পৌঁছোন সোনম। তার পর গুয়াহাটি থেকে ট্রেনে করে উত্তরপ্রদেশে আসেন। উত্তরপ্রদেশে নেমে সোনম কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, সেই তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে তদন্তকারীদের সন্দেহ, গাজ়িপুরের ধাবায় পৌঁছোনোর আগে সোনম অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে পারেন। এখন সে সবই জানার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজার খুনের পর তদন্ত কোন পথে এগোচ্ছে, সেই ঘটনার উপর নজর রাখছিলেন সোনম। তিনি এটাও জানতেন যে, মৃত ভেবে তাঁর লাশেরও খোঁজ চলছে। এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু তাঁর ‘প্রেমিক’ রাজ কুশওয়াহাকে পুলিশ ইনদওর থেকে গ্রেফতার করার পরই সোনমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রাজ গ্রেফতার হতেই সোনমের আর এক বন্ধু তাঁকে ফোন করে সেই খবর দেন। তার পরই গাজ়িপুরের এক ধাবায় পৌঁছে ‘আত্মসমর্পণের’ পরিকল্পনা করেন সোনম।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সোনম এবং তাঁর ‘প্রেমিক’ রাজ এমন পরিকল্পনা করেছিলেন যে, কারও যেন সন্দেহ না হয়। তাই আগেভাগেই ইনদওরে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ। অন্য দিকে, সোমন এবং রাজের পরিকল্পনামাফিক তিন অভিযুক্ত আকাশ, বিশাল এবং আনন্দ শিলঙে পৌঁছে যান। তিন জনকে এই নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা যেন শিলং থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিন জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিয়ের পাঁচ দিনের মধ্যেই রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করেন সোনম। ১১ মে বিয়ে হয়েছিল রাজা-সোনমের। বিয়ের পর পরই একটি ক্যাফেতে ‘প্রেমিক’ রাজের সঙ্গে দেখা করেন সোনম। সেই ক্যাফেতেই তৈরি হয় রাজা-হত্যার ‘ব্লুপ্রিন্ট’।