Advertisement
E-Paper

সোনমই মূল ষড়যন্ত্রকারী, মনে করছে পুলিশ! শাশুড়িকে ফোন করে ‘অসত্যভাষণ’ ছাড়াও যে দুই ‘তথ্য’ বাড়িয়েছিল সন্দেহ

মেঘালয়ের পূর্ব খাসি হিলসের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম বলেন, ‘‘রাজার দেহ ২ জুন উদ্ধার হয়। তাঁর দেহ উদ্ধারের পরই মনে হয়েছিল, এটি সাধারণ কোনও নিখোঁজের ঘটনা নয়। এই ঘটনার তদন্তের জন্য আমরা সিট গঠন করি।’’

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৫ ১৪:২০
Share
Save

রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশীকেই এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসাবে মনে করছে পুলিশ। কিসের ভিত্তিতে তাঁকে মূল অভিযুক্ত মনে করা হচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মেঘালয়ের পূর্ব খাসি হিলসের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, কেন এই ঘটনায় রাজার স্ত্রী সোনমের উপরেই সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছিল।

‘দৈনিক ভাস্কর’কে এসপি সিয়েম বলেন, ‘‘রাজার দেহ ২ জুন উদ্ধার হয়। তাঁর দেহ উদ্ধারের পরই মনে হয়েছিল, এটি সাধারণ কোনও নিখোঁজের ঘটনা নয়। এই ঘটনার তদন্তের জন্য আমরা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করি। আমাদের বেশ কয়েকটি দল আলাদা আলাদা ভাবে প্রমাণ সংগ্রহ করে। তার পর সেই টুকরো টুকরো তথ্য একত্রিত করার পরই বোঝা যায়, এই ঘটনার নেপথ্যে সোনমের হাত রয়েছে। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতেই সোনমকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে মনে করছি আমরা।’’

শাশুড়িকে ফোন করে উপবাসের কথা বলেছিলেন সোনম

একই সঙ্গে একটি ‘অসত্যভাষণ’ এবং দু’টি তথ্য সোনমের প্রতি এই ঘটনায় সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছে পুলিশের। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম যে তথ্য সোনমের প্রতি সন্দেহ বাড়িয়েছে সেটি হল, শাশুড়িকে ফোন করে সোনম জানিয়েছিলেন তিনি উপবাস ভাঙেননি। কিন্তু ঘটনাচক্রে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২৩ মে দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ শাশুড়ি উমা রঘুবংশীর ফোনে কথা হয়। তখন শাশুড়ি জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁরা খাবার খেয়েছেন কি না। উত্তরে সোনম জানান, তিনি খাবার খাননি। তবে রাজা কিছু ফল খেয়েছেন। সেই সূত্র ধরেই শিপারার হোমস্টের মালিককে জেরা করে পুলিশ। তখন তিনি দাবি করেন, গত ২৩ মে হোমস্টেতে আসেন সোনম। তার পর খাবার অর্ডার দেন। খাওয়াদাওয়া করেন। কিন্তু ওই রাজার সঙ্গে বার হলেও একাই হোমস্টেতে ফিরে এসেছিলেন তিনি। আর এখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ তৈরি হয়। কারণ শাশুড়িকে উপবাসের কথা বলেছিলেন সোনম, অথচ হোমস্টেতে ফিরে খাওয়াদাওয়া করেন। এই পরস্পরবিরুদ্ধ তথ্যই সন্দেহ আরও দৃঢ় করে বলে জানিয়েছে শিলং পুলিশ।

স্থানীয় গাইডের বয়ান এবং হোমস্টেতে সোনমের একা ফিরে আসা

পুলিশ সূত্রে খবর, আরও একটি তথ্য যেটি সোনমের প্রতি সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছিল। সেটি হল, স্থানীয় গাইডের বয়ান। স্থানীয় গাইড অ্যালবার্ট পেড পুলিশের কাছে দাবি করেন, সোনমকে গত ২৩ মে রাজা ছাড়াও আরও তিন পর্যটকের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। তাঁরা সকলে নোংরিয়াট থেকে মাওয়াখিয়াতের উদ্দেশে রওনা হয়। তিন পর্যটক রাজার সঙ্গে যাচ্ছিলেন। আর সোনম ছিলেন পিছনে। অ্যালবার্টের দাবি, তিন পর্যটক হিন্দিতে কথা বলছিলেন। অ্যালবার্টের তথ্যের সূত্র ধরে সোনম এবং রাজার ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করে পুলিশ। আর সেই সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে সোনম বেঁচে রয়েছেন। ময়নাতদন্তে রাজার মৃত্যুর সময় এবং শাশুড়িকে সোনমের ফোন করার সময় মিলিয়ে দেখা হয়। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে সোনম তাঁর শাশুড়িকে ২৩ মে দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ ফোন করেছিলেন। তার ঠিক আধ ঘণ্টার মধ্যে রাজা খুন হন।

হানিমুনে গেলেও কেন সমাজমাধ্যমে নিজস্বী দেননি রাজা-সোনম

তৃতীয় যে তথ্য পুলিশের সন্দেহ বাড়িয়েছিল তা হল, মধুচন্দ্রিমায় গেলেও কেন কোনও নিজস্বী বা রাজা-সোনমের কোনও ছবি সমাজমাধ্যমে ছিল না। সোনমের সমাজমাধ্যম ঘাঁটার পরে তেমন কোনও তথ্য মেলেনি। রাজা-সোনম ২১ মে শিলং পৌঁছোন। সেখানে একটি হোটেলে ঘর বুক করেন। ২২ মে দু’জনের সোহরার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে পৌঁছে সোহরা থানার পাশেই একটি হোটেলে যান তাঁরা। কিন্তু ঘর না পাওয়ায় হোটেলে লাগেজ রেখে ঘুরতে বেরিয়ে যান। ওই দিনই রাজা-সোনম মালখিয়াত গ্রামে যান। সেখান থেকে নোংরিয়াটে ‘লিভিং রুট ব্রিজ’ দেখতে যাওয়ার জন্য একটি স্কুটি ভাড়া করেন তাঁরা। রাতে হোমস্টেতে থাকেন। আবার পর দিন মালখিয়াতের উদ্দেশে রওনা হন। তদন্তকারীরা বলছেন, কোনও যুগল বা নবদম্পতি মধুচন্দ্রিমায় এসে নিজেদের ছবি। জায়গার ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়ে থাকেন। বেশির ভাগই তাই করেন। সেই সূত্র ধরে রাজা এবং সোনমের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তেমন কোনও ছবি পাওয়া যায়নি। যখন পুলিশ ছবি না তোলা এবং সমাজমাধ্যমে না দেওয়ার ‘সাইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট’ করে, তখন তারা জানতে পারে রাজা এবং সোনমের মধ্যে কিছু একটা গন্ডগোল চলছিল।

মেঘালয় পুলিশ সূত্রে খবর, পরিকল্পনামাফিক ২০ মে শিলঙে যাওয়ার টিকিট করিয়েছিলেন সোনম। সোনমের শাশুড়ি উমার দাবি, শিলঙে ঘুরতে যাওয়ার কোনও কথাই বাড়িতে জানাননি সোনম। রাজা কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ঘুরতে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না তাঁর। কিন্তু সোনম টিকিট কেটে রাজাকে জানানোর পর তিনি শেষমেশ যেতে রাজি হন।

রাজা রঘুবংশী খুনে সোমবার উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের একটি ধাবা থেকে সোনমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁকে শিলঙে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

meghalaya

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।