Advertisement
E-Paper

আগুন দেখে শরীরে ক্ষত নিয়েই হামাগুড়ি! কোনও রকমে দরজা খুলে যাত্রীদের বাঁচান কন্ডাক্টর, কী ঘটেছিল রাজস্থানের বাসে

কন্ডাক্টরের প্রতি অনেকেই কৃতজ্ঞ। নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না-করে তিনি অনেক যাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন। কোনও রকমে হামাগুড়ি দিয়ে দরজায় পৌঁছেছিলেন তিনি। যাত্রীদের টেনে বার করেছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৪০
রাজস্থানের রাস্তায় জলন্ত সেই বাস।

রাজস্থানের রাস্তায় জলন্ত সেই বাস। ছবি: পিটিআই।

দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছিল চলন্ত বাস। যাঁরা বেরোতে পেরেছেন, বেঁচে গিয়েছেন। যাঁরা ভিতরে আটকে পড়েছিলেন, আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। রাজস্থানের জৈসলমেরে মঙ্গলবার বিকেলের ঘটনায় ২০ মৃত্যুর পরেও কিন্তু ‘নায়ক’ সেই বাসের কন্ডাক্টর। যাত্রীদের মুখে মুখে তাঁর নাম ঘুরছে। তাঁর প্রতি অনেকেই কৃতজ্ঞ। তিনি সময়মতো বাসের দরজাটি না খুলতে পারলে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে যেত। হয়তো কাউকেই আর বাঁচানো যেত না!

জৈসলমের থেকে জোধপুরের দিকে যাচ্ছিল সদ্য কেনা এসি বাসটি। ছিলেন অন্তত ৫৭ জন যাত্রী। আচমকা সেই বাসে আগুন ধরে যায়। আগুন দেখতে পেয়ে চালক বাস থামিয়ে দিয়েছিলেন প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের দরজা, জানলা বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বেরোতে পারছিলেন না। অনেকে বাসের জানলার কাচ ভেঙে ফেলেন নিরুপায় হয়ে। বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন রফিক খান। তিনি আগুনের শিখা এড়িয়ে কোনও রকমে বাসের দরজার কাছে পৌঁছোন এবং দরজা খুলে দেন। নিজের প্রাণের চেয়েও যাত্রীদের প্রাণ বাঁচানোকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন।

শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে রফিক এখন হাসপাতালে। তাঁর ভাই জানিয়েছেন, যে সময়ে বাসে আগুন লাগে, তখন রফিক ছিলেন বাসের পিছন দিকে। একেবারে পিছনের আসনের যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করছিলেন। আচমকা আগুন দেখে সকলে ভয় পেয়ে যান। রফিক ছুটে দরজার কাছে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক পা এগোতেই বাসের ছাদ থেকে আগুনের শিখা বেরিয়ে আসে নীচের দিকে। বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। আগুনে গুরুতর জখম হন কন্ডাক্টর।

এর পরেও অবশ্য তিনি থামেননি। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি ছিল না। কোনও রকমে হামাগু়ড়ি দিয়ে দরজার কাছে পৌঁছোন এবং দরজাটি খুলে দেন। অনেক যাত্রীকে তিনি নিজে টেনে বাস থেকে নামিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও যাত্রীদের উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন। গোটা ঘটনায় পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। অন্তত ১৫ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কী ভাবে বাসটিতে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, বাসে দাহ্য পদার্থ ছিল। বদ্ধ জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়তেও অসুবিধা হয়নি।

বাসের উপরের বার্থে অনেকে ঘুমোচ্ছিলেন। এক যাত্রী জানিয়েছেন, জানলার কাচ ভেঙে স্ত্রী, শ্যালিকা এবং এক সন্তানকে তিনি বার করতে পেরেছিলেন। কিন্তু উপরের বার্থে ঘুমন্ত বাকি দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Rajasthan bus fire Jaisalmer Jodhpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy