অপারেশন হমদর্দ। দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে ফরিদাবাদ থেকে ধৃত চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে ‘অপারেশন হমদর্দ’-এর কথা উল্লেখ রয়েছে বলে তদন্তকারী এক সূত্রের দাবি। ওই সূত্রের আরও দাবি, জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠন সংখ্যালঘু অল্পবয়সি তরুণীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তাঁদের ‘মগজধোলাই’ করে ‘অপারেশন হমদর্দ’-এ শামিল করত। ইন্ডিয়া টিভি ডট ইন-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ওই অপারেশনকে তিন ধাপে ভাঙা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
প্রথম ধাপ: আর্থিক ভাবে দুর্বল এ রকম সংখ্যালঘু তরুণী এবং মধ্যবয়স্ক মহিলাদের বেছে নেওয়া হত। তাঁদের টাকার লোভ দেখিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপে নিয়োগ করা হত।
দ্বিতীয় ধাপ: যে সব সংখ্যালঘু মহিলা মুক্তমনা তাঁদের বিদেশযাত্রা, আরামের জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়োগ করা হত।
তৃতীয় ধাপ: যে সব মহিলার চিন্তাভাবনা উগ্র এবং বিচার-বিবেচনায় কট্টরপন্থার ছাপ রয়েছে, যাঁদের সহজেই জিহাদের রাস্তায় ঠেলে দেওয়া যাবে, তাঁদের বেছে নেওয়া হত। তদন্তকারীদের এক সূত্রের দাবি, ‘অপারেশন হমদর্দ’-এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন শাহীন। আর তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
‘অপারেশন হমদর্দ’-এর পাশাপাশি চিকিৎসক শাহীনের একটি ‘টিম ডি’ ছিল বলে তদন্তকারী সূত্রের দাবি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা সেই ‘টিম ডি’-এর রহস্য উন্মোচন করেছে। সূত্রের খবর, ‘টিম ডি’-তে চিকিৎসক শাহীনের সঙ্গী চিকিৎসকেরা শামিল ছিলেন। ওই সূত্রের দাবি, জঙ্গিদের মধ্যে যে সাঙ্কেতিক ভাষায় কথা বলা হত, তার কয়েকটি উদ্ধার হয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে ‘স্পেশ্যালিস্ট’। জঙ্গিরা একে অপরকে এই নামে ডাকত। এ ছাড়াও ‘হার্ট স্পেশ্যালিস্ট, আই স্পেশ্যালিস্ট, ফিজিশিয়ান’-এর মতোও সাঙ্কেতিক ভাষার হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারী এক সূত্রের খবর, টাকার জন্য ব্যবহার করা হত ‘অপারেশন কী তৈয়ারী’, ছোট অস্ত্রের জন্য ‘মেডিসিন স্টক’, যে জায়গা রেকি করা হয়েছে তার জন্য ব্যবহার করা হত ‘অপারেশন থিয়েটার’।
তদন্তকারী সূত্রের খবর, লখনউয়ের লালবাগের বাসিন্দা চিকিৎসক শাহীনের যে ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেটিতে ভুয়ো সিমকার্ড ব্যবহার করা হত। ২০২৩ সালে ফরিদাবাদের ধৌজের এক মসজিদের ঠিকানায় ওই সিমকার্ড নেওয়া হয়েছিল। আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ওই ফোন নম্বরই ব্যবহার করতেন শাহীন। ওই সূত্রের খবর, শাহীন কখনও নিজের বাড়ির ঠিকানা কোথাও লিখতেন না। বরং স্থায়ী ঠিকানা হিসাবে তাঁর ভাই চিকিৎসক পারভেজ আনসারির বাড়ির ঠিকানা দিতেন। ঘটনাচক্রে, পারভেজও তদন্তকারীদের সন্দেহের আওতায় রয়েছেন। তাঁকেও গ্রেফতার করে জেরা করা হচ্ছে।