মানব পাচার রোধে কঠোর আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইন মোতাবেক তদন্ত, বিচার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শাস্তি ঘোষণার হারের নিরিখে ভারত এখনও অনেক পিছিয়ে।
আমেরিকার বিদেশ দফতরের ট্রাফিকিং ইন পার্সন (টিআইপি)–এর সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ এবং পূর্ব এশিয়ার নিরিখে ভারতের অবস্থা বাংলাদেশ ও ভুটানের থেকে ভাল। বাংলাদেশ ও ভুটান দ্বিতীয় স্তরের ‘ওয়াচ-লিস্ট’ বা পর্যবেক্ষণ-তালিকায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গত সাত বছর ধরেই দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে ভারত। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তদন্তকারী অফিসার, পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পাচারকারীরা ধরা পড়লেও জামিন পেয়ে যাচ্ছে।
২০১৪-’১৫ সালে দেশের মোট মানব পাচারের পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে ওই রিপোর্টে। তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছর ধরে শুধু ভারত থেকেই মানুষ পাচার (যৌন ব্যবসার ও শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানোর জন্য) হচ্ছে না। অন্য দেশ থেকেও মেয়ে বা ছেলে পাচার হয়ে আসছে এ দেশে। করিডর হিসেবেও এ দেশের বিভিন্ন জায়গাকে ব্যবহার করছে পাচার চক্রগুলি।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য ওই রিপোর্টে কিছু প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সব জেলায় ‘অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট’ (এএইচটিইউ) গঠন, স্বাভাবিক পদ্ধতিতে তদন্ত প্রক্রিয়ায় পাচার হওয়া মেয়ে বা ছেলেকে চিহ্নিতকরণ, তাদের নিরাপদ পুর্নবাসন, ক্ষতিপূরণের উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে রিপোর্টে।
জোর দিতে বলা হয়েছে তদন্তকারীদের প্রশিক্ষণের উপরেও। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে পাচার হওয়া মহিলা উদ্ধার হলেও যথাযথ চার্জশিটের অভাবে পাচারকারী ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত মানুষ পাচারের মতো সংগঠিত অপরাধের মোকাবিলা করার দায়িত্ব এনআইএ-র হাতে অর্পণ করার নির্দেশ দেয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সায় দেওয়ার পরে বিষয়টি সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে ভারত। ক্ষতিপূরণের দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলেও ওই মহিলারা তা পান না। অনেকে কোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হন। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এক কিশোরীর ক্ষতিপূরণে দেরির বিষয়টি দেখার জন্য স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটিকে নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy