নিজেকে ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খুব কাছের বলে দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করার জন্য চিন এবং ইউরোপের দেশগুলিকে নিশানা করলেও ভারত সম্পর্কে কড়া কোনও মন্তব্য শোনা গেল না তাঁর গলায়। অনেকেই মনে করছেন, এই সবই ট্রাম্পের সুর নরম করার ইঙ্গিত। এই আবহে আমেরিকাকে তোপ দেগেছে রাশিয়া। মস্কোর বক্তব্য, ভারত এবং চিনের উপর আমেরিকা শুল্ক নিয়ে হুমকি দিয়ে গেলেও তাতে যে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, তা টের পাচ্ছে হোয়াইট হাউসও।
ব্রিটেন সফরে গিয়েছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার তিনি দেখা করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে। তার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমি ভারতের খুব কাছের। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছের মানুষ। আমি সম্প্রতি ওঁকে ফোন করেছিলাম। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম। আমাদের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক।” তার পরই রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ইউরোপের দেশগুলিকে নিশানা করেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসাতে বিশ্বে তেলের দাম কমানো প্রয়োজন বলেও সওয়াল করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্প বলেন, “দেখতে পাচ্ছিলাম ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়া থেকে ক্রমাগত তেল কিনে যাচ্ছে। কিন্তু আমি ওদের (রাশিয়া) উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছি। চিন এখন খুব বড় অঙ্কের শুল্ক দিচ্ছে আমেরিকাকে। কিন্তু আমি অন্য কিছুও করতে চাই। যদি তেলের দাম কম থাকে, খুব স্বাভাবিক যে, তা হলে রাশিয়াও আলোচনার টেবিলে বসবে। তেলের দাম কমছেও।” ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর অনেকের অনুমান, রাশিয়াকে ‘ভাতে মারতে’ ফের কোনও পদক্ষেপ করবেন ট্রাম্প। তবে সেটি কোনও দেশের উপর চড়া হারের আমদানি শুল্ক আরোপ কি না, তা স্পষ্ট নয়। যেমন স্পষ্ট নয়, নয়াদিল্লির উপর আর কোনও ‘শাস্তিমূলক’ শুল্ক ট্রাম্প প্রশাসন আরোপ করবে কি না।
ট্রাম্প এই মন্তব্য করার কিছু ক্ষণ পরেই রুশ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, “চিন আর ভারত, দু’টিই খুব প্রাচীন সভ্যতা। তাঁদের বলা হয়েছে, আমি যেটা পছন্দ করি না, হয় সেটা বন্ধ করো, না হলে আমি শুল্ক চাপাব। কিন্তু এই কৌশল কাজে আসেনি। আমেরিকাও এটা বুঝতে পেরেছে।” প্রসঙ্গত, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য ভারতের অধিকাংশ পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। তার পরেও অবশ্য মস্কো থেকে তেল আমদানি করা অব্যাহত রেখেছে ভারত।
বুধবার লাভরভ বলেন, আমেরিকা রাশিয়ার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও মস্কোর কোনও সমস্যাই হয়নি। নিজের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে লাভরভ বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, নতুন বিধিনিষেধে আমি অন্তত রাশিয়ার কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছি না।” ট্রাম্প প্রথম বার প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ও (২০১৬ থেকে ২০২০) যে রাশিয়ার উপর বহু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, সে কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। রাশিয়া অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছে বলেও দাবি করেন লাভরভ।