চার বছর আগে এক রাতে বরাত অনুযায়ী খাবার দিতে গিয়েছিলেন এক গৃহস্থকে। কিন্তু তাঁর ঠিকানায় যাওয়া হয়নি ডেলিভারি বয়ের। রাস্তায় লরির ধাক্কায় বাইক নিয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন ৩৩ বছরের সৈয়দ কুরেশি। পরের দিন হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল পরিবার। পায়নি। অবশেষে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে ২৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পাচ্ছেন মৃত ডেলিভারি বয়ের স্ত্রী ও কন্যা। ট্রাইব্যুনালের (এমএসিটি) পর্যবেক্ষণ, ‘‘শেষ চেষ্টা করেও দুর্ঘটনা এড়াতে পারেননি ডেলিভারি বয়। দোষ ছিল লরিচালকেরই।’’
২০২১ সালের ২১ মার্চ মহারাষ্ট্রের ঠাণে জেলার বাসিন্দা সৈয়দ ভিওয়ান্ডির দিকে যাচ্ছিলেন বাইকে। একটি অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থার অধীনে কাজ করতেন যুবক। মুম্বই-নাসিক হাইওয়ের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা একটি লরি ধাক্কা দেয় সৈয়দকে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। চার বছর পরে ওই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সৈয়দের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার ট্রাইব্যুনাল সদস্য আরভি মোহিত জানান, দুর্ঘটনার দায় ছিল লরিচালকের। ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ, বাইকচালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল। বাইকের সমস্ত কাগজপত্র ঠিকঠাক। অন্য দিকে, লরিচালকের লাইসেন্স ছিল না। তা ছাড়া তাঁর দোষেই দুর্ঘটনা হয়েছিল। মোহিত বলেন, ‘‘বাইক থেকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ওই যুবক। তাঁর ঊরু এবং কোমরের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল লরির পিছনের একটি চাকা। সব দিক খতিয়ে দেখে এটা প্রমাণিত যে, লরিচালকের জন্যই মৃত্যু হয়েছে বাইকচালকের।’’
আরও পড়ুন:
এর পর ওই লরির মালিককে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। জানানো হয়, ডেলিভারি বয়ের মাসিক রোজগার ছিল মাত্র ১২ হাজার টাকা। সেই হিসাবে মৃতের স্ত্রী এবং নাবালিকা কন্যাকে ২৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪০০ টাকা দিতে হবে। বছরে ৯ শতাংশ সুদ যুক্ত করা হয়েছে ওই ক্ষতিপূরণে। কাকে কত টাকা দিতে হবে, সেটাও বলে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। নির্দেশে বলা হয়েছে, মৃতের স্ত্রী পাবেন ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪০০ টাকা। ৯ লক্ষ টাকা পাবেন কন্যা এবং ৩ লক্ষ দিতে হবে বাবাকে। তা ছাড়া মৃতের স্ত্রী ও কন্যা যাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পান ওই অর্থ ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে হবে।